প্রযুক্তি শিল্পে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ বা কর্মস্থল থেকে দূরে বসে ‘রিমোট জব’-এর সুযোগ দেয়, এমন চাকরির সাক্ষাৎকারে প্রতারকরা ‘ডিপফেইক’ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। চাকরির সাক্ষাৎকারে ডিপফেইক প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিপাকে ফেলছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেট। এই খাতে প্রতারণার কৌশল হিসেবে ডিপফেইক প্রযুক্তির ব্যবহারও অভিনব বিষয়। খবর বিডিনিউজের।
ইতোমধ্যেই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন নিয়োগদাতা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। প্রতারকরা কেবল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজের চেহারা এবং কণ্ঠস্বর পাল্টে ফেলছেন না, মূল ব্যক্তির ব্যক্তিগত ও গোপন তথ্য চুরি করে নিজের বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিডিও বা ছবির মূল ব্যক্তির কণ্ঠস্বর ও চেহারা পাল্টে দিতে পারে ডিপফেইক প্রযুক্তি। আসল ব্যক্তি কখনোই বলেননি, ভিডিওতে এমন বক্তব্যও দেওয়ানো সম্ভব এই প্রযুক্তির মাধ্যমে।
এফবিআই সবাইকে সতর্ক করে বলেছে, প্রযুক্তি খাতে বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি, প্রোগ্রামিং, ডেটাবেইজ এবং সফটওয়্যার সংশ্লিষ্ট রিমোট জব-এর সাক্ষাৎকারে ডিপফেইক প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন প্রতারকরা। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার সময় নিয়োগদাতাদের কাছে ধরাও পড়েছেন কয়েকজন। ভিডিওতে মুখের অভিব্যক্তি ও ঠোটের নড়াচড়ার সঙ্গে অডিওর অসামঞ্জস্যতা এবং বিশেষ করে চাকরিপ্রার্থী ভিডিও কলে হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় ধরা পড়েছে তাদের ডিজিটাল অপকৌশল।
এছাড়াও, নিজের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য অন্য ব্যক্তির ব্যক্তিগত গোপন তথ্য নিজের বলেও চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ওই প্রতারকরা। প্রযুক্তি শিল্পের মূলধারায় ডিপফেইক প্রযুক্তির অভিষেক হয়েছে ২০১৯ সালে। এই প্রযুক্তির কার্যক্ষমতা যাচাই করতে বিভিন্ন সময়ে রসিকতা করে ভিডিও বানিয়েছেন সৌখিন প্রযুক্তিভক্তরা। কিন্তু একই সঙ্গে পর্নগ্রাফি ভিডিওতে মানুষের চেহারা বসিয়ে বিব্রত করতে এবং রাজনৈতিক মিথ্যাচার প্রচারেও ব্যবহৃত হয়েছে এই প্রযুক্তি।
মার্চ মাসেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির একটি ডিপফেইক ভিডিও মুছে দিয়েছে বৃহত্তম সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক। ডিপফেইক মোকাবেলায় সমপ্রতি নিজস্ব নীতিমালা আরও কঠিন করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। কিন্তু, চাকরির সাক্ষাৎকারের মতো দৈনন্দিন বিষয়ে এই প্রযুক্তির অপব্যবহারু এই প্রযুক্তি সহজলভ্যতা এবং এর ঝুঁকির ওপর আলোকপাত করছে বলে মন্তব্য করেছে সিনেট।