বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি নিজের পৈতৃক আড়াই কানি জমিতে পেঁপে চাষ করেছিলেন কক্সবাজারের চকরিয়ার বরইতলী ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইতলী গ্রামের দেবাশীষ শর্মা বাবলু। তিনি সাত মাস আগে রেড লেডি ও টপ লেডি প্রজাতির প্রায় সাড়ে চারশ চারা রোপণ করেন ওই পরিমাণ জমিতে। চারা ক্রয়, সার প্রয়োগ, পরিচর্যায় শ্রমিক নিয়োগের বিপরীতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকার মতো। বর্তমানে সেই বাগানে গাছে গাছে ঝুলছে ফল। এরই মধ্যে সেখান থেকে বিক্রি হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকার পেঁপে। বাকি পেঁপে বিক্রি করে আরও দেড় লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন তিনি। সরেজমিন বাবলুর পেঁপে বাগান পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়, সাত মাস আগে নিজের জমিতে লাগানো পেঁপে গাছে বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে পরিপক্ক হওয়ার পর দুই দফায় বাগান থেকে প্রায় ২০০ মণ পেঁপে তোলা হয়েছে। আর এসব পেঁপে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি।
বেসরকারি চাকরির পাশাপাশি পেঁপে চাষসহ মিশ্র ফল-সবজির বাগানের উদ্যোক্তা দেবাশীষ শর্মা বাবলু দৈনিক আজাদীকে বলেন, পৈতৃকভাবে বেশ কয়েক কানি জমি রয়েছে আমাদের। সেই জমিতে পুকুর খনন করে মৎস্য চাষের পাশাপাশি পুকুরের পাড়ে এবং সমতল জমির প্রায় আড়াই কানি জমিতে সাত মাস আগে প্রায় সাড়ে চারশ পেঁপে গাছের চারা রোপণ করি। পাশাপাশি লেবু গাছের চারাসহ রকমারি সবজিরও আবাদ করা হয়েছে একই জমিতে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র পেঁপে বাগান থেকে এক মাসের ব্যবধানে পরিপক্ক হওয়ায় দুই দফায় প্রায় ২০০ মণ পেঁপে তোলা হয়েছে। আরো প্রায় দেড়শ মণ পেঁপে গাছে ঝুলছে। বেশ চাহিদা থাকায় ইতোমধ্যে দুই দফায় তোলা পরিপক্ক পেঁপে পাইকারদের কাছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করে অন্তত দুই লাখ টাকা আয় হয়েছে। আরো প্রায় দেড় লাখ টাকার পেঁপে চলতি মৌসুমে পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, চাকরির পাশাপাশি নিজের জমিতে করা এই শখের বাগানে প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় পেঁপে ঝুলে থাকতে দেখে মনটা ভরে যায়। আশা করছি, এই বাগান থেকে এভাবে আগামী দুই বছর এসব গাছ থেকে পেঁপের ফলন পাবো। এদিকে চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজীব দে দৈনিক আজাদীকে জানান, উপজেলার অন্তত ৩৫ হেক্টর জমিতে রেড লেডি, টপ লেডি ও শাহী প্রজাতির পেঁপের চাষ হয়েছে। উপজেলার হারবাং, বরইতলী, ফাঁসিয়াখালী, কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর, বমুবিলছড়ি, কৈয়ারবিলসহ ৯টি ইউনিয়নে পেঁপে চাষ করে কৃষকের ভাগ্যবদল হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন,
কাঁচা এবং পাকা পেঁপের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাজারে। তাই এই পেঁপে চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে প্রতিটি ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপারভাইজাররা মাঠপর্যায়ে তদারকি করছেন। যাতে কৃষকেরা সঠিক পরামর্শগুলো পায়। পাশাপাশি কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ থেকে শুরু করে সার্বিক সহায়তা দিয়ে আসছে চাষিদের। এতে উপজেলায় পেঁপে চাষের বাম্পার উৎপাদন হওয়ায় আর্থিকভাবে বেশ লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা।