চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরাম গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, ‘চলে আসুন ষোলশহর’। এরপর গিয়েছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিলে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ষোলশহর থেকে খবর আসে তিনি মারা গেছেন।
এর আগে গত সোমবার রাতে ফেইসবুকে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আমার প্রাণের সংগঠন। আমি এই পরিচয়ে শহীদ হব’ স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম। তার ফেইসবুকে নগর বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেনসহ বিএনপি এবং ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ছবি রয়েছে।
ওয়াসিম ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ফেইসবুকের ওই স্ট্যাটাসের সঙ্গে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে তিনি পাঁচটি ছবিও দিয়েছিলেন। আগের রাতে স্ট্যাটাস দিয়ে গতকাল তিনি আন্দোলনে অংশ নেন এবং সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের বেধড়ক পিটুনি ও ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান।
পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, নিহত ওয়াসিম আকরামের বাড়ি কঙবাজারের পেকুয়া উপজেলার মেহেরনামা গ্রামে। ওই গ্রামের সবুর আলমের ছেলে তিনি। নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে তিনি কলেজে অধ্যয়ন করতেন।
ওয়াসিম আকরামকে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য দাবি করে নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম আজাদীকে বলেন, ওয়াসিম ছিলেন ছাত্রদলের সক্রিয় নেতা। সভা–সমাবেশে তিনি প্রথম দিকে থাকতেন। ওয়াসিম গতকাল কোটা সংস্কার আন্দোলনে অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে রাজপথে মিছিল করছিলেন। মুরাদপুর এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায় তিনি প্রাণ হারান বলে দাবি করেন সাইফুল।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ওয়াসিমের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু জানান, চট্টগ্রাম কলেজের মেধাবী ছাত্র ওয়াসিম আকরাম বহদ্দারহাট এলাকায় থাকতেন। তিনি দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকতেন। গতকাল দুপুর থেকেই তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিয়ে মুরাদপুর এলাকায় অবস্থান করছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়। আহত অবস্থায়ও তাকে বেধড়ক পেটানো হয়। তার কয়েকজন বন্ধু তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কৃত ঘোষণা করেন।