চমেকে নেওয়ার পথে চবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, গাফিলতির অভিযোগ

চবি মেডিকেল চিকিৎসকের অপসারণসহ ১০ দাবি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৬ অক্টোবর, ২০২৪ at ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ

শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পরিসংখ্যান বিভাগের এক ছাত্রী। গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রীর নাম নাঈম নির্মা। তিনি পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১২২ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকার একটি বাসার দুই তলায় থাকতেন ওই ছাত্রী। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বাসার অন্য দুইজনের সহযোগিতায় নাঈমাকে চবি মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে দুপুর ২টার দিকে অক্সিজেন দিয়ে চমেক হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক সান্তনু মজুমদার। তবে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এক নম্বর গেট এলাকায় গেলে সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। পরে হাটহাজারী থেকে একটি সিলিন্ডার কিনে পুনরায় চমেক হাসপাতালের উদ্দেশে রওয়ান দেন তারা। সেখানে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা চবি মেডিকেলে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় মেডিকেলের উন্নয়নে ১০ দফা দাবি পেশ করেন তারা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, চিকিৎসকের অপসারণ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন, ওষুধ সরবরাহ ও অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা বৃদ্ধি, সাইকিয়াট্রিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি ও নাঈমা নির্মার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

নাঈমার সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন এমন একজনের সঙ্গে কথা বলেছেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম নিথি। তিনি বলেন, নাঈমার অ্যাজমার সমস্যা ছিলো। শুক্রবার এ সমস্যা গুরুতর হলে তাকে চবি মেডিকেলে নেওয়া হয়। তার জরুরি অঙিজেনের প্রয়োজন ছিলো। তবে চবি মেডিকেলে গাফিলতির কারণে অঙিজেন দিতে দেরি হয়।

কর্তব্যরত চিকিৎসক সান্তনু মজুমদার বলেন, যে দুইজন ওই ছাত্রীকে নিয়ে মেডিকেলে এসেছিলো তারা বাসার মধ্যে অজ্ঞানই পেয়েছিলো। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়ও কোনো রেস্পন্স পায়নি বলে জানায়। নিয়ে আসার পর করিডর থেকে চেক করে ভেতরে নিয়ে প্রেশারসহ সবকিছু চেক করে কোনো রেস্পন্স পাইনি। তবুও ফারদার ম্যানেজমেন্টের জন্যই মেডিকেলে চেক আপের জন্য পাঠানো হয়। তিনি আরও বলেন, ওনার সাথে যারা ছিলো আমি ইনডিরেক্টলি তাদের বলেছি ওনার আব্বাআম্মাকে খবর দিতে। কারণ, ইসিজি বা নিশ্চিত না হয়ে সরাসরি কিছু বলা যায় না। আমরা তাকে ১০ লিটারের হাই ফ্লো সিলিন্ডারটাই দিয়েছিলাম। এটা ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট চলার কথা। চবি মেডিকেলের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, প্রশাসন থেকে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। চিকিৎসকের যদি কোনো গাফিলতি থাকে, অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আরও ২৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত
পরবর্তী নিবন্ধনিখোঁজের ৫ দিন পর ঝোপে মিলল আওয়ামী লীগ নেতার লাশ