চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীকে শহরস্থ চারুকলা ইনস্টিটিউটের হোস্টেলে আটকে রেখে নির্যাতন ও পরীক্ষা দেওয়া থেকে বিরত রাখার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার স্বাগত দাস চারুকলা ইন্সটিটিউটের ২০২১–২২ সেশনের শিক্ষার্থী। জানা যায়, অভিযুক্তরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত।গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী স্বাগত দাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ঘটনায় ৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রক্টর বরাবর চিঠি দেন ভুক্তভোগী স্বাগত দাস। অভিযুক্তরা হলেন, চারুকলা ইন্সটিটিউটের ২০২–২১ সেশনের আলমাস মাহফুজ রাফিদ (মূল নেতা), ফরহাদ হোসেন সুমন, সাগর রয় অনিক ও মেহেদী হাসান। অভিযুক্ত ৪ জনই চারুকলা ইন্সটিটিউটের ২০২০–২১ সেশনের শিক্ষার্থী। অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, আজ ২৮ এপ্রিল (রোববার) সকাল সাড়ে ৮ টায় শহরে চারুকলা ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে আমি বাস থেকে নামার পর আলমাস (২০–২১) আমাকে জোরপূর্বক রশিদ চৌধুরী হোস্টেলের ১নং রুমে নিয়ে আটকে রাখে। ওই রুমে চারজন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধর শুরু করে। পালাক্রমে আলমাস, সুমন মেহেদী, সাগর। সবাই চারুকলা (২০–২১) সেশনের শিক্ষার্থী।
এতে আরোও উল্লেখ করা হয়, আমাকে মারধর শেষে আলমাস হাতে ও গলায় জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। তারা আমাকে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করে এবং আমাকে বর্ষ ‘ফিগার স্টাডি’ কোর্স–১০৩ পরীক্ষা দিতে দেয়নি। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই এবং আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই।
ভুক্তভোগী জানান, তুষার দে (২০–২১) নামে এক ভাই এসে আমাকে বাঁচাতে চাইলে উনাকেও তারা মারধর শুরু করে। তাঁকে কেন মারধর করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমাকে কেন মারধর করেছে আমি জানি না। তাদের সাথে আমার পূর্বের কোনো শত্রুতা নেই। তবে আমাদের ‘সিএফসি’ ও ‘ভিএঙ’ গ্রুপের মধ্যে ঝামেলার জন্যই হয়তো আমাকে মারধর করেছে। আর আলমাস, উনি আমার ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র। উনার সাথে আমি একই মেসে থেকেছি। তবুও কেন তারা আমাকে মেরেছে আমি জানি না। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মূল হোতা আলমাস মাহফুজ রাফিদকে মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে চারুকলা ইন্সটিটিউটের পরিচালক সুফিয়া বেগম বলেন, যখন ঘটনাটি ঘটে তখন আমি মূল ক্যাম্পাসে একটি প্রোগ্রামে ছিলাম। আমি তাকে (ভুক্তভোগী) প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিতে বলেছি। এরকম কিছু ঘটে থাকলে মূল অপরাধীদের অবশ্যই শাস্তি আওতায় আনতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. অহিদুল আলম বলেন, এটি একটি বিবেক বিবর্জিত কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে না দেওয়ায় একটি ন্যক্কারজনক কাজ। আগামীকাল প্রক্টর অফিসে এ নিয়ে মিটিংয়ে আলোচনা ও তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।