চবি শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের প্রতিবাদে ৩ সদস্যের বিবৃতি

চবি প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১১ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:২৭ পূর্বাহ্ণ

নিয়োগে অনিয়মসহ নানা অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য ও উপউপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে চবি শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে শিক্ষকদের একটি অংশ আন্দোলন করে আসছে। সেই আন্দোলনের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে শিক্ষক সমিতিরই কার্যনির্বাহী পর্ষদের তিন সদস্য।

গত মঙ্গলবার প্রফেসর ড. রকিবা নবী, প্রফেসর ড. দানেশ মিয়া এবং প্রফেসর ড. ফরিদুল আলমের স্বাক্ষর করা বিবৃতিতে একদফা দাবির আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে জানান শিক্ষক সমিতির এই তিন সদস্য।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গত কিছুদিন ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ব্যানারে উপাচার্য এবং উপউপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে যে আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হয়েছে তা দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এই আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে, এমন দাবি করা হলেও অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে শিক্ষক সমিতির একাংশ তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে পুঁজি করে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

তারা আরও বলেন, এ ধরনের কর্মসূচির বিষয়ে গত কয়েক মাস আগে সমিতি কর্তৃক আহুত সাধারণ সভার সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় আলোচনা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশকে বিঘ্নিত করে হীন কিছু ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে এ ধরনের কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে বলে আমরা মনে করি।

গতকাল ৯ জানুয়ারি সমিতির নির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভা আহ্বান করা হয় বলে উল্লেখ করে ওই তিন শিক্ষক বিবৃতিতে বলেন, যেখানে শীতকালীন ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর উপাচার্য এবং উপউপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবি চলমান রাখা এবং রেজিস্ট্রার কর্তৃক গত ১৭ ডিসেম্বর বাংলা এবং আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড চলাকালীন বোর্ড বাতিলের দাবিতে কিছু শিক্ষকের উপাচার্যের কার্যালয়ে সমবেত হওয়া এবং পরবর্তীতে এটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কর্তৃক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিএ দু’টি বিষয় আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সভার আগের দিন সন্ধ্যায় এ বিষয়ে নোটিশ প্রেরিত হয়।

শিক্ষকগণ বলেন, এখানে উল্লেখ করতে হয় যেজরুরি সভায় একের অধিক বিষয়ে আলোচনা করার কোনো বিধান নেই, সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ দিনের সময় দিয়ে নোটিশ দেওয়ার বিধান রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সভার শুরুতে প্রতিবাদ করলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক দুটি বিষয় একটির সাথে আরেকটি সম্পর্কিত মন্তব্য করে বিষয় ‘ক’ এবং বিষয় ‘খ’ বলে মন্তব্য করলে আমরা বিনয়ের সাথে এ দুটি বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা এবং যে কোন একটি বিষয়ের উপর আলোচনার অনুরোধ করি। দুঃখের বিষয়, আমাদের ৩ জনের আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে তারা তাদের আলোচনা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিলে আমরা কেবল প্রথম বিষয়ে আলোচনার জন্য সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দ্বিতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনায় আমাদের অনুপস্থিতির কথা জানিয়ে দিই।

বিবৃতিতে এটিও উল্লেখ করা হয়, শিক্ষক সমিতির একাংশের দাবি এবং কর্মসূচি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য কর্তৃক একাধিকবার সমিতিকে চায়ের নিমন্ত্রণ করলেও সেটি আমলে নেয়া হয়নি। আমরা বারবার বুঝানোর চেষ্টা করেছি যে সমস্যা সমাধানে আলোচনার কোন বিকল্প নেই। আমাদের প্রতিটি পরামর্শ সমিতির একাংশের সংখ্যাগরিষ্ঠতার নামে প্রত্যাখ্যাত হলে বাধ্য হয়ে আমরা নির্বাহী সভা থেকে ওয়াকআউট করি। আমরা মনে করি আলোচনার পথটি রুদ্ধ করে সমিতির কতিপয় সদস্যের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থির করার প্রয়াস কোনোভাবেই শুভবুদ্ধির পরিচায়ক হতে পারে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮০ যাত্রী নিয়ে কক্সবাজার পৌঁছালো পর্যটক এক্সপ্রেস
পরবর্তী নিবন্ধবিরোধীদলে ছিলাম, বিরোধীদলে থাকতে চাই : জিএম কাদের