‘শিবির ট্যাগ’ দিয়ে আটকে রেখে নির্যাতনের পর পরিবার থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ৫ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে চবি ইতিহাস বিভাগের ২০১৯–২০ সেশনের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জাহিদ হাসান। একই অভিযোগে অজ্ঞাত আরও ১০–১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। গতকাল বুধবার জাহিদ হাসান নিজে বাদী হয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে হাটহাজারী মডেল থানায় অভিযোগ করেন।
অভিযুক্তরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিক্সটি নাইনের অনুসারী বলে জানা গেছে। তারা হলেন ফারসি বিভাগের ২০১৭–১৮ সেশনের অনিক দাশ, একই সেশনের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাহিন মিয়া, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের জাহেদ এবং বাংলা বিভাগের ২০১৮–১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আকিব জাবেদ ও একই সেশনের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী অপু আহমেদ অনিক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৩ জুন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী মোড় থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জাহিদ হাসানকে ছাত্রলীগের নেতারা জোরকরে শাহজালাল হলে তুলে নিয়ে যায়। তাকে শিবিরের সদস্য বলে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
এ সময় তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন চেক করে ছাত্র শিবিরের সাথে কোনো সংশ্লিষ্টতা না পেলে তার ওপর আরও চড়াও হয় নেতারা। শিবিরের সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দেওয়ানোর জন্য বেধড়ক মারধর করে। ছাত্রলীগ নেতাদের এলোপাতাড়ি কিল, লাথি–ঘুষিতে বেশ জখম হয় জাহিদ হাসান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, আমি অভিযোগ করেছি তাদের বিরুদ্ধে। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আইনি পদক্ষেপ নিলে তৎকালীন পুলিশসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহযোগিতার সম্ভাবনা ছিল। তারা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল, তাই প্রাণভয়ে আমি ঘটনা জানাজানি করিনি। নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মূলত পেশাদার সন্ত্রাস। আগামীতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আছি। তবে পুলিশ প্রশাসন থেকে আমি এ নিয়ে সর্বোচ্চ আশ্বাস পেয়েছি। আমি তাদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান একটি অভিযোগ করেছে। তাকে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। আমরা তার নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে কাজ করে যাবো। তাছাড়া এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।