চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটভুক্ত বিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান অনুষদ ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ইউনিটটিতে মোট আবেদন করেছে ৯৯ হাজার ৫২১ জন শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৭৭ হাজার ২৫৯ জন। উপস্থিতির হার ৭৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ‘এ’ ইউনিটে মোট আসন রয়েছে ১ হাজার ২১৫ টি।
গতকাল শনিবার বিকাল পাঁচটায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ‘এ’ ইউনিটের কো–অর্ডিনেটর ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নাসিম হাসান। তিনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। চবির বাইরে পাঁচটি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা শহরের পাঁচটি কলেজে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও পাঁচটি কেন্দ্রে শনিবার ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রগুলো হলো, হাটহাজারী সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারী এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ওয়াসা মোড় দামপাড়া ক্যাম্পাস, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও চারটি ইউনিট ও দুটি উপ–ইউনিটে পরীক্ষা হবে। মোট ৪ হাজার ৯২৬ টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫৫ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ, আসন প্রতি লড়বেন ৪৯ জন। এবারের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে বা কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রক্টরিয়াল বডিকে অবহিত করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এজন্য ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় নম্বারসহ পোস্টার লাগানো থাকবে। এরপর ৮ মার্চ ‘বি’ ইউনিট, ৯ মার্চ ‘সি’ ইউনিট এবং ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা। এছাড়া ‘বি ১’ উপ–ইউনিটের পরীক্ষা আজ রবিবার, ‘ডি–১’ উপ–ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল সোমবার, ‘বি–১’ উপ–ইউনিটের ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে ১২, ১৩ ও ১৪ মার্চ এবং ‘ডি–১’ উপ–ইউনিটের ব্যবহারিক পরীক্ষা ১০ ও ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষার্থীদের স্বস্তি প্রকাশ: বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমেছে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী–অভিভাবকরা। স্বস্তি দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের চোখমুখে। সন্তোষ প্রকাশ করে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলেন, অর্থও সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি সময়ের অপচয়ও রোধ হচ্ছে। এছাড়া পরীক্ষার্থীরাও মানসিক চাপ মুক্ত থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন। যা পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক উভয়ের জন্যই স্বস্তির। বিভাগীয় পর্যায়ে কেন্দ্র থাকায় চবিতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এর সাথে কমেছে ভোগান্তিও। হাটহাজারী থেকে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী মারুফ হুসাইন বলেন, আমরা ঢাবির পরীক্ষা বিভাগীয় শহর চবিতে দিয়েছি। এতে আমাদের ভোগান্তি কমেছে। যদি চবির বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা না হতো তাহলে কমপক্ষে দুদিন আগে পরীক্ষার্থীদের চবিতে অবস্থান করতে হতো।
ভর্তি পরীক্ষার সার্বিক বিষয় নিয়ে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, আমরা সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষার সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছি। এ বছর আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও ৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি। আশা করি এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কমে আসবে।
নিরাপত্তার ব্যাপারে জানতে চাইলে চবি প্রক্টর প্রফেসর ড. নূরুল আজিম সিকদার জানান, আমরা পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নিয়েছি। পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি, বিএনসিসি, র্যাব, রোভার স্কাউট, নিরাপত্তা কর্মী এবং রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে সহযোগিতা করছে। আশা করি সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পাদন করতে পারব।