চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রদলকর্মী ও বহিরাগতরা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শাকিব ও আইন বিভাগের ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের কাপিলসহ মোট ৭–৮ জন মিলে এ হামলা চালায় বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন। একই সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল চলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ অডিটোরিয়ামে। হামলার নেতৃত্ব দানকারী শাকিবের গলায় ছাত্রদলের ইফতার মাহফিলের স্বেচ্ছাসেবক কার্ড ঝুলানো ছিল বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। এছাড়া হামলার সময়ের কয়েকটি ভিডিওতে হামলাকারী শাকিবের গলায় ছাত্রদলের কার্ড ঝুলতে দেখা গেছে। সেসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রক্টর বরাবর দেয়া অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের আজারুল ইসলাম বিপ্লব, অর্ণব সরকার, চারুকলার ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের অঙ্কিতা বশাক, কনক কুমার চাকমা, মো. রাজিবুল হাসান রূপক, মো. নূর ইকবাল সানি, প্রকৃতি সাহা, জাকিয়া পারভিন ও অনন্যা আচার্য স্বাক্ষর করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা পুরাতন শিক্ষা ও গবেষণা ভবন প্রাঙ্গণে ইফতার করার জন্য যাচ্ছিলাম। চবির জিমনেশিয়ামের রাস্তা পার হওয়ার সময় একটা বাইক বেপরোয়া গতিতে আসে। আমাদের কারণে তাদের বাইক স্লো করতে হয়েছে, সে জন্য তারা আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে ও মারার অঙ্গভঙ্গি করে চলে যায়। এর একটু পর আমরা যখন ইফতার করতে বসি তখন তারা বহিরাগতসহ কয়েকটা বাইক নিয়ে আসে। আমাদের সাথে কোনো কথাবার্তা না বলেই অতর্কিত হামলা করে। এ সময় তারা মেয়েদের গায়েও হাত তুলেছে। আশপাশে থাকা কয়েকজন নিরাপত্তা ও আনসার কর্মী সব দেখেও কিছু করেনি। উল্টো হামলাকারীদের চলে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, হামলাকারীরা চলে যাওয়ার সময় আমাদের ছবি ভিডিও করে নিয়ে যায় ও দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় আমরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহশিন বলেন, আজকে আমাদের অনুষ্ঠানে আমাদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসেছিলেন। প্রোগ্রাম শেষে আমি উনাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। বাইরে কী হয়েছে সে ব্যাপারে খবর নিতে পারিনি। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী আমাদের কেউ এখন পর্যন্ত মব জাস্টিসের মতো ঘটনায় যুক্ত হননি। এর পরেও আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিব। কারো বিরুদ্ধে যদি প্রমাণ পাই তাহলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সাইদ বিন কামাল চৌধুরী বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ গ্রহণ করেছি। এ নিয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল বডিতে আলোচনা করব। অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।