চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য স্থানে গ্যাসের যোগান স্বাভাবিক রাখতে সরকার চড়া মূল্যে এলএনজি আমদানি করছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক কার্গো এলএনজি মহেশখালীতে এসে পৌঁছাবে। চলমান রমজান, ঈদ, আসন্ন গরম এবং সর্বোপরি কৃষিখাতকে সংকটমুক্ত রাখতে এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কার্গো আমদানির ফলে চট্টগ্রামে গ্যাসের যোগান বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ দৈনিক ১১শ মিলিয়ন ঘনফুটের স্থলে ৮শ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছিল। আমেরিকা থেকে আমদানি করা এলএনজি দেশে পৌঁছালে সরবরাহ ১১ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই এলএনজি আমদানির প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দর পড়ছে ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়বে ১৪ দশমিক ৩০ মার্কিন ডলার। সাধারণত প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়ে ৯ থেকে ১২ ডলার।
সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে ১ কার্গো (২৫ থেকে ২৬ মার্চ সময়ের জন্য ১২তম) তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলেরেট এনার্জি থেকে উক্ত এক কার্গো এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। আকারভেদে একটি কার্গোতে ১ লাখ ৩৮ হাজার ঘনমিটার থেকে ২ লাখ ৬৬ হাজার ঘনমিটার পর্যন্ত এলএনজি থাকে।
সূত্র জানিয়েছে, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪১০ কোটি ঘনফুট। পেট্রোবাংলা ২৫৫ কোটি ঘনফুট গ্যাসের যোগান দিতে পারে; যা চাহিদার মাত্র ৬২ শতাংশ। আবার এই গ্যাসের একটি বড় অংশের যোগান দেওয়া হয় আমদানিকৃত এলএনজির মাধ্যমে। সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, দেশের মোট গ্যাসের চাহিদার অন্তত ২৫ শতাংশ এলএনজির মাধ্যমে সরবরাহ দেওয়া হয়। অপরদিকে চট্টগ্রামে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪শ মিলিয়ন ঘনফুট। এখানে সরবরাহ দেওয়া হয় দৈনিক ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। চট্টগ্রামের গ্যাসের চাহিদার পুরোটাই দেওয়া হয় আমদানিকৃত এলএনজি দিয়ে। সিলেট বা কুমিল্লা অঞ্চলের গ্যাস চট্টগ্রামে আনার কোনো সুযোগ না থাকায় আমদানিকৃত এলএনজি নির্ভরতা তৈরি হয়েছে।