চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে

সাংবাদিকদের ইসি আনিছুর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক আগে ‘ভোট ডাকাত’ নামে একটা শব্দ ছিল, এখন সেটি নেই

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৪ জুলাই, ২০২৩ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, চট্টগ্রাম১০ আসনের উপনির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে। এক্ষেত্রে সবাইকে সতর্কভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইভিএমে একজনের ভোট আরেকজনের দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আগে ‘ভোট ডাকাত’ নামে একটা শব্দ প্রচলিত ছিল, কিন্তু এখন সেটি নেই। ভোটার ছাড়া ভোট কেন্দ্রে কেউ প্রবেশ করতে পারে না। চট্টগ্রাম১০ আসনের উপনির্বাচনে সবক’টি কেন্দ্রে আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতির দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের না। উপস্থিতি বাড়ানোর দায়িত্ব প্রার্থীদের। তাদের প্রচারপ্রচারণা এবং তৎপরতা থাকতে হবে। আরেকটি বিষয়, জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। এর মধ্যে উপনির্বাচন হচ্ছে। এ কারণে হয়তো ভোটারদের উপস্থিতি একটু কম হচ্ছে। ঢাকা১৭ আসনে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হয়েছেন। তবে ভোটারের উপস্থিতি যাই হোক আমরা তার ভিত্তিতে ফল ঘোষণা করব। অতীতেও করেছি এবং ভবিষ্যতেও করব।

চট্টগ্রাম১০ আসনের উপনির্বাচন সামনে রেখে গতকাল বিকালে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ইসি আনিছুর রহমান এসব কথা বলেন। হিরো আলমের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি নিন্দনীয় কাজ। ঢাকা১৭ আসনে নির্বাচন শেষ হওয়ার একটু আগে প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে, যেটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে। এতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বরিশাল সিটি নির্বাচনেও এ রকম ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা যারা করে তারা কারও উদ্দেশ্য সফল করার জন্য করে নাকি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য করে তাও প্রশ্নসাপেক্ষ।

ইসি আনিছুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে প্রার্থী ছোটবড় বলে কিছু নেই। প্রার্থী যেই হোক তার নিরাপত্তা বিধান আমাদের দায়িত্ব। এখন প্রার্থীদের সঙ্গে সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। প্রার্থীদেরকে বলেছি তারা যেখানে যাবেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকে যাতে অবহিত করেন। প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নতুন দুটি দলের নিবন্ধন পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু এখনো কোনো দলকে নিবন্ধন দেইনি। মাঠ পর্যায়ে যাচাইবাছাই করে দুটি দলকে নিবন্ধনের সুপারিশ করা হয়। এটাই আমরা বলছি। ২৬ তারিখের মধ্যে যদি কোনো আপত্তি থাকে। তাহলে আমরা বিষয়টি দেখব। এখন এর মধ্যে কেউ অভিযোগ দিলে সেটি ২৬ তারিখের পর যাচাইবাছাই করা হবে। এরপর নিবন্ধনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বদলি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এখনো প্রশাসন আমাদের আওতার বাইরে। যখন তফসিল ঘোষণা করা হবে, তখন বদলি, নিয়োগ সব আমরা করতে পারব। তখন অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একজনের ভোট আরেকজন দিচ্ছেএমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচনে ভোটার কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারেননি, এ রকম অভিযোগ আমরা পাইনি। ইভিএম পদ্ধতিতে একজনের ভোট আরেকজনের দেওয়ার তো সুযোগ নেই। এখন কেউ কেন্দ্রে না এসে বাড়িতে বসে অভিযোগ দিলে তো আমাদের করার কিছু নেই। এখন প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকে, শুধুমাত্র গোপন কক্ষ ছাড়া। ওই কক্ষে কেউ ঢুকতে পারে না। আবার বাইরের সব দৃশ্য কিন্তু আমরা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখতে পারি।

চট্টগ্রাম১০ আসনের উপনির্বাচনে বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সব প্রার্থী নির্বিঘ্নে প্রচারপ্রচারণা চালাচ্ছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে এক প্রার্থীর প্রধান কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিন্তু মামলা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়া বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা বলেছি, কোনো ঘটনাকে ছোট করে দেখলে হবে না। একটির কারণে কিন্তু আরেকটি ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ্য, ২ জুন চট্টগ্রাম১০ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যু হলে ৪ জুন আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। এরপর নির্বাচন কমিশন এই আসনে উপনির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ জুলাই এই আসনে উপনির্বাচন হবে। ১৫৪ কেন্দ্রের সবগুলোতেই ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে। প্রত্যেক কেন্দ্রে থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুরাদপুর বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে আগুন
পরবর্তী নিবন্ধ‘ভুঁইফোড় আইপি টিভির’ আসল-নকল বোঝা মুশকিল : তথ্যমন্ত্রী