চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের বিরুদ্ধে একটি মহল নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থেই এই ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। গতকাল সকালে হাসপাতালটির চিকিৎসক–নার্স–কর্মকর্তা–কর্মচারীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালকে চট্টগ্রামবাসীর গর্বের সম্পদ বলে আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে পরিচালিত সকল ষড়যন্ত্র প্রতিরোধের আহ্বান জানান। জনগণের অর্থানুকূলে পরিচালিত চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের বিরুদ্ধে কিছু অপশক্তির ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে হাসপাতাল চত্বরে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে হাসপাতালের সর্বস্তরের ডাক্তার, নার্স এবং কর্মকর্তা কর্মচারীরা অংশ নেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, হাসপাতাল দখলে একটি চক্র বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যা হাসপাতালের সেবা দানের পরিবেশকে বিনষ্ট করছে। ষড়যন্ত্র না করে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনের সুযোগ আছে। সুতরাং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব গ্রহণ করুক। এতে হাসপাতালের সেবা দানের পরিবেশেও প্রভাব পড়বে না।
বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বক্তারা আরও বলেন, করোনাকালে যখন অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছিলো না, তখন এই পরিচালনা পরিষদই সাহসী ভূমিকা রেখেছে, তারা সব কর্মচারীদের বেতন বোনাস নিশ্চিত করেছে। হাসপাতালকে এই মহিরুহ করার পেছনে এই পরিচালনা পরিষদের অবদান আমরা ভুলতে পারি না। তাই আমাদের একটাই দাবি কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে দেব না। করোনাকালে এই হাসপাতালের কার্যক্রম জাতি আগামী দিনগুলোতেও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। ভবিষ্যতের যে কোন মহামারী কিংবা দুর্যোগ দুর্বিপাকে মা ও শিশু হাসপাতালের করোনাকালীন ভূমিকা উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হবে।
চট্টগ্রামের বিত্তবানদের কাছ থেকে সাহায্য সহায়তা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে চট্টগ্রামের দুই কোটিরও বেশি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল। দেশে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে এমন পূর্ণাঙ্গ একটি ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার সৎসাহস এই প্রতিষ্ঠানকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জালাল উদ্দীন, পেডিয়েট্রিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মাহমুদ এ চৌধুরী আরজু, গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সিরাজুন নূর রোজী, অধ্যাপক ডা. তাহেরা বেগম, শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের আইসিএইচ ডেপুটি ডাইরেক্টর ডা. আবু সৈয়দ চৌধুরী, সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জেসমিন আখতার, এডাল্ট আইসিইউ অ্যান্ড এএমইউ‘র সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেহেদি হাসান, এনেস্থেসিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ইফতেখার উদ্দিন তামিম, শিশু নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ধনঞ্জয় দাশ, শিশু নেফ্রলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কামাল হোসেন জুয়েল, কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সাইফুদ্দীন আজাদ, শিশু আইসিইউ‘র সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাহিম হাসান রেজা ও ডা. মিশু তালুকদার, শিশু হেমাটো অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ইন্দিরা চৌধুরী, চমেক হাসপাতালের পোস্ট গ্রাজুয়েট কমিটির সদস্য ডা. তাশদীদ নূর, মা ও শিশু হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের মেডিকেল অফিসার আশিক হোসেন সাকিবসহ হাসপাতালের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।