দেশের একমাত্র মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) চট্টগ্রাম কার্যালয়ের বেড়েছে সক্ষমতা। গত জুনে বিএসটিআইয়ে স্থাপিত হয়েছে অত্যাধুনিক পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষাগার (ল্যাব)। ফলে এখন ১১৫ পণ্যের রাসায়নিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা যাচ্ছে। এতে দেশের ব্যবসায়ীরা উপকৃত হচ্ছেন।
আমদানিকৃত পণ্যের গুণগত মান ঠিক আছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে হয় কর্মকর্তাদের। সেই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সবকিছু নির্ভর করে। এখানে আধুনিক ও পূর্ণাঙ্গ ল্যাব না থাকার কারণে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ঢাকার ওপর নির্ভর করতে হতো চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের। এতে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থের অপচয় হতো।
এমন পরিস্থিতিতে ‘সমন্বিত উদ্যোগে টেকসই উন্নত বিশ্ব বিনির্মাণে মান’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো আজ পালিত হবে বিশ্ব মান দিবস। পণ্য ও সেবার মানের বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।
জানা গেছে, বিএসটিআই দেশে উৎপাদিত শিল্পপণ্য, বৈদ্যুতিক ও প্রকৌশল পণ্য, খাদ্য ও কৃষিজাত পণ্যসহ মোট ৩১৫টি পণ্য নজরদারি করছে। এসব পণ্যের মধ্যে চট্টগ্রামে ল্যাবে রাসায়নিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হতো ১১৫টি পণ্যের। এছাড়া ফিজিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন করা যেত ৬৭টি পণ্যের। নতুন ল্যাবে পানি, গুঁড়ো দুধের মেলামিন, ফায়ার এক্সটিংগুইসারের মান, ত্বকের বিভিন্ন প্রসাধনী, ইলেকট্রিক মিটারের মান, লেখা এবং ছাপাখানার কাগজ পরীক্ষা, শিশু খাদ্য, টাইলস, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেল, কলম, সস, জুস, টুথপেস্ট, শ্যাম্পু, পেনসিল, চকলেট, মেটার মেলামিন, এন্টিবায়েটিক, স্বর্ণের বিশুদ্ধতা নির্ণয় করা হবে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রামে বিএসটিআই কার্যালয়ের কাজের পরিধি বাড়লেও সক্ষমতা সেভাবে বাড়েনি। বর্তমানে বিএসটিআই চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম নগরী ও উপজেলা ছাড়াও রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম তদারকি করা হয়।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিএসটিআইয়ের মূল তদারকির কাজ চারটি বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে টেস্টিং কেমিক্যাল, টেস্টিং ফিজিক্যাল, মেট্রোলজি ও সার্টিফিকেশন মার্কস (সিএম)। জনবল সংকটের কারণে মাঠ পর্যায়ে বিএসটিআইয়ের মনিটরিং জোরদার করাও সম্ভব হচ্ছে না। বিএসটিআইয়ের সার্টিফিকেশন মার্কস (সিএম) বিভাগে একজন উপ–পরিচালক, ৪ জন সহকারী পরিচালক ও ১১ জন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা দিয়ে পুরো চট্টগ্রাম বিভাগে কাজ চালাতে হচ্ছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে মেট্রোলজি বিভাগে। সেখানে একজন উপ–পরিচালক, ১ জন সহকারী পরিচালক এবং ৬ জন পরিদর্শক রয়েছে। অপরদিকে টেস্টিং ফিজিক্যালে একজন উপপরিচালক, ২ জন সহকারী পরিচালক এবং ৪ পরীক্ষক দিয়ে চলছে কার্যক্রম। এছাড়া টেস্টিং কেমিক্যাল বিভাগে পরীক্ষক আছেন মাত্র ১৪ জন, এছাড়া একজন উপপরিচালক এবং ২ জন সহকারী পরিচালক।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপ–পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানি আজাদীকে বলেন, বিএসটিআই কাজ মূলত ল্যাব নির্ভর। ইতোমধ্যে আমাদের ল্যাবের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। জনবলের সমস্যা ছিল সেটিও অনেকটা কেটে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৭ জন নতুন পরীক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সামনে আরো নতুন নিয়োগ হতে পারে। এছাড়া আমাদের ল্যাবে অনেক মেশিন এখনো পুরোপুরি চালু করা হয়নি। সেগুলো চালু করা হলে পরীক্ষার সক্ষমতা আরো বাড়বে।