চট্টগ্রাম থেকে আলোচনায় কারা

নতুন মন্ত্রিসভা ।। শোনা যাচ্ছে হাছান মাহমুদ, জাবেদ, ফজলে করিম, নওফেল, ওয়াসিকা, রুহুলের নাম

হাসান আকবর ও শুকলাল দাশ | বুধবার , ১০ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ। টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনের পথে আওয়ামী লীগ। আজ বুধবার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন। আগামীকাল নতুন মন্ত্রিসভার শপথ হবে। সারা দেশের মতো চট্টগ্রামবাসীর দৃষ্টি নতুন মন্ত্রিসভার দিকে।

নানা সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নের মতো মন্ত্রিসভায়ও থাকতে পারে চমক। আসতে পারে বেশ কিছু নতুন মুখ। নতুন মন্ত্রিসভায় দপ্তর পরিবর্তন হতে পারে অনেকের। অনেকে বাদ পড়তে পারেন। প্রমোশনও হতে পারে অনেকের। মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম থেকে ক্লিন ইমেজের কে কে স্থান পাচ্ছেন তা নিয়ে নির্বাচনের আগে থেকেই আলোচনা ছিল। নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর সেই আলোচনা ডালপালা মেলতে শুরু করে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের মন্ত্রিসভা হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট মন্ত্রিসভা। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা অনেকবার বলেছেন। সেখানে স্মার্ট, উচ্চ শিক্ষিত, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিরাই থাকবেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও তাদের বক্তব্যে বিষয়টি বারবার বলেছেন। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় করা থাকছেন, এতে চট্টগ্রাম থেকে কারা স্থান পাচ্ছেন তা দেখার জন্য কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যারা প্রধানমন্ত্রীর গুডবুকে রয়েছেন শপথ নেওয়ার পর তাদের নতুন মন্ত্রিসভায় শপথের দাওয়াত দেবেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব।

মন্ত্রিসভায় কারা আসছেন? এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ আওয়ামী লীগের নেতারা। একাধিক নেতা আজাদীকে বলেন, এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। এ বিষয়ে কোনো কমেন্ট করতে চাই না।

নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য চট্টগ্রামের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা গতকাল ঢাকায় চলে গেছেন। এদের অনেকে নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টাতদ্বির করছেন বলে জানা গেছে। এজন্য অনেকে আগেই ঢাকায় গেছেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তিন দিনের মাথায় টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দলের প্রধান হিসেবে পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন ড. হাছান মাহমুদ। ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ছিলেন মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সংসদের হুইপ করা হয়েছিল পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীকে। এছাড়া পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদায় রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি করা হয়েছিল রাউজান থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে। সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খানকে করা হয়েছিল বিদ্যুৎজ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি।

চট্টগ্রাম থেকে আলোচনায় কারা : নতুন মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রাম থেকে কে কে স্থান পেতে পারেন তা নিয়ে আলোচনা নির্বাচনের আগে থেকেই ছিল। এবার চট্টগ্রাম থেকে আলোচনায় আছেন প্রায় ৭ জন সংসদ সদস্য। এদের মধ্যে ৬ জন নির্বাচিত সংসদ সদস্য, এদের একজন জাতীয় পার্টির। এছাড়া একজনের টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি আলোচনা আছে।

নতুন মন্ত্রিসভায় গতবারের মতো এবারও চট্টগ্রাম থেকে আলোচনার শীর্ষে আছেন রাঙ্গুনিয়া থেকে পরপর চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এবারও তার তথ্য মন্ত্রণালয় অথবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর জ্যেষ্ঠ সন্তান সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, একবার ভূমি প্রতিমন্ত্রী, গতবার ওই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এবারও তার মন্ত্রী হওয়ার কথা নানাভাবে শোনা যাচ্ছে।

রাউজান থেকে পাঁচবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীও এবার মন্ত্রীর হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন। কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন, এবার চট্টগ্রামের ১৬ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র মিলে যে ১৫ জন সংসদ সদস্য (জাপার ব্যারিস্টার আনিস ছাড়া) নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে ফজলে করিম চৌধুরী সিনিয়র। তিনি পরপর তিনবার সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি (একবার গৃহায়ণ, দুই বার রেলপথ মন্ত্রণালয়) ছিলেন।

কোতোয়ালী আসন থেকে পরপর দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবার পদোন্নতি পেয়ে প্রতিমন্ত্রী হতে পারেন কথা শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে, মীরসরাই আসন থেকে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত তরুণ সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমান রুহেলও নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন।

এদিকে টেকনোক্র্যাট কোটায় এবার মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা আছে ওয়াসিকা আয়শা খানের। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত আতাউর রহমান খান কায়সারের জ্যেষ্ঠ কন্যা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক এবং বিদ্যুৎজ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি।

জানা গেছে, যদি মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির কাউকে রাখা হয় তাহলে হাটহাজারী থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদেরও মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
পরবর্তী নিবন্ধকাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে গেল ম্যাক্সিমা, আহত ২