চট্টগ্রাম কাস্টমসে সার্ভার সমস্যার স্থায়ী সমাধান কবে

গতকালও সার্ভারের ত্রুটিতে কাজ বন্ধ ছিল সাড়ে ৬ ঘণ্টা শুল্কায়ন বন্ধ থাকায় ব্যাহত পণ্য খালাস ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে পোর্ট ডেমারেজ

জাহেদুল কবির | বুধবার , ৯ জুলাই, ২০২৫ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে সার্ভার সিস্টেমের সমস্যা কোনোভাবেই কাটছে না। ঘণ্টার পর অপেক্ষা করেও আমদানিরপ্তানি নথি দাখিল করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে পণ্য শুল্কায়ন ব্যাহত হচ্ছে। শুল্কায়ন ব্যাহত হওয়ায় যথাসময়ে পণ্য খালাসও হচ্ছে না। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন গেট ও সড়কে ট্রাককাভার্ড ভ্যানের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। সড়কে বেড়েছে যানজট। এতে নাগরিকদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টমসে একেবারে কাজ হয়নি। গত কয়েক বছর ধরে প্রায় সময় সার্ভারের সমস্যা লেগে থাকছে।

তবে সম্প্রতি সেটি চরম আকার ধারণ করেছে। আগে থেমে থেমে কাজ করা গেলেও এখন কাজই করা যাচ্ছে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সার্ভারের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বলা হয়েছে। বিনিময়ে নতুন সার্ভারের আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। অথচ এই সার্ভারের সমস্যার জন্য ব্যবসায়ীদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। বন্দরের বাড়ছে কন্টেনার জট। এছাড়া ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে পোর্ট ডেমারেজ। এখন আবার পোর্ট ডেমারেজ চারগুণ করা হয়েছে। এমনিতে সম্প্রতি এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ধ করে দেয় কর্মকর্তারা। এছাড়া বিভিন্ন সময় কলম বিরতি তো ছিলই। এ কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন সার্ভারের সমস্যার কারণে ব্যবসায়ীদের ভুগতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যকে গতিশীল করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে অটোমেশনের যাত্রা শুরু হয়। এক সময় অ্যাসাইকুডা প্লাস প্লাস ভার্সন থাকলেও গত ২০১৩ সাল থেকে কাস্টমসে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড পদ্ধতি চালু হয়। এই পদ্ধতিতে আামদানি রপ্তানি কার্যক্রমের প্রায় সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই সার্ভারের গতি কমে যাওয়া কিংবা বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে আমদানিকারকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দেখা গেছে, যে কাজ এক মিনিটে হওয়ার কথা সেটি করতে পাঁচ মিনিট লাগছে। কাস্টমসে আমদানি রপ্তানি মিলে প্রতিদিন গড়ে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার পর্যন্ত বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী রিগ্যান দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে সার্ভারের সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ভুগতে হচ্ছে। আজকে (গতকাল) প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা কাজ হয়নি। আমরা সার্ভারের সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। পৃথিবীর অনেক দেশে এখন অ্যাসাইকুডা সিস্টেম বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তারা নিজস্ব সার্ভারে কাজ করছে। সার্ভারের সমস্যা নিয়ে কাস্টমসের কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও সঠিক কোনো তথ্য পাচ্ছি না। একেক জনে আমাদের একেকভাবে ব্যাখা দিচ্ছে। এখন আমরা যাব কোথায়।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সহকারী প্রোগ্রামার মো. সোহাগ হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, সার্ভারের সমস্যা সমাধানে এনিবআরের বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করছে। ইতোমধ্যে একজন বিশেষজ্ঞ পরিদর্শন করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতৈরি পোশাক খাত নিয়ে শঙ্কা
পরবর্তী নিবন্ধদিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি, ভোগান্তি