সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও বন্ধ নেই নিম্ন আদালতের কার্যক্রম। আইনের শাসন রক্ষায় একচ্যুয়াল ব্যবস্থা স্থগিত রেখে ভার্চুয়ালি হচ্ছে মামলার শুনানি। তবে এ ব্যবস্থায় শুধুমাত্র জামিন শুনানি ও অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আমলে সুপ্রিম কোর্ট। বাকি কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখারও নির্দেশনা রয়েছে। আদালত সূত্র জানায়, গত ১২ এপ্রিল ভার্চুয়াল কোর্ট চালু হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক মোট ১ হাজার ৩৫০টি মামলার জামিন শুনানি হয়েছে। এর মধ্যে ৪৮৬ জন আসামি জামিন পেয়েছেন।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্র জানায়, তাদের আদালতে মোট ৯৮৩ মামলায় জামিন বিষয়ে শুনানি হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪১টি মামলায় জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আদালত। বাকি ২৭৭ মামলায় ২৯৩ জন আসামি জামিন পেয়েছেন। এছাড়া জামিন সংক্রান্ত ৭৩টি আবেদন অন্যান্যভাবে শুনানি করেছেন আদালত। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্র জানায়, গত ১২ এপ্রিল থেকে তাদের আদালত মোট ৫৬৭টি মামলায় ভার্চুয়াল শুনানি করেছেন। এর মধ্যে ১৯৩ জন আসামি জামিন পেয়েছেন।
এদিকে আইনজীবীরা বলছেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একমাত্র জামিন পাওয়াটা নির্ভরতা হতে পারে না। আমরা চলমান এ ভার্চুয়াল ব্যবস্থার বাতিল চাই। সীমিত আকারে একচ্যুয়াল বা নিয়মিত কোর্ট চালু করা হোক। বর্তমানে বন্ধ রয়েছে আত্মসমর্পণের সুযোগ ও সিভিল-ফৌজদারি মামলা ফাইলিংয়ের বিষয়টি। ফলে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে। আইনজীবী টিআরখান আজাদীকে বলেন, ট্রায়াল মামলা যেমন চার্জ শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ শুনানি, যুক্তিতর্ক শুনানি বন্ধই থাকুক। এসবের কারণে কোনো সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আত্মসমর্পণের সুযোগ ও মামলা ফাইলিংয়ের বিষয়টি বন্ধ থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তাই আমরা চাইছি সীমিত আকারে একচ্যুয়াল কোর্ট চালু হোক।
এ বিষয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে হলে জেলা আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি এএইচএম জিয়াউদ্দিন আজাদীকে বলেন, জামিনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা ভালো। তবে সে সাথে আত্মসমর্পণের সুযোগ ও মামলা ফাইলিংয়ের সুযোগ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে সম্প্রতি দু-দুবার প্রধান বিচারপতি বরাবরে লিখিত আবেদন করেছি। যাতে ভার্চুযাল কোর্ট ব্যবস্থা বাতিল করে সীমিত আকারে একচ্যুয়াল কোর্ট ব্যবস্থা চালু করেন।
একচ্যুয়াল কোর্ট চালু করলে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সংক্রান্ত সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে। যোগ করেন আইনজীবী এএইচএম জিয়াউদ্দিন।
উল্লেখ্য, করোনার দ্বিতীয় ডেউ শুরু হলে নিম্ন আদালতের একচ্যুয়াল ব্যবস্থা স্থগিত করে ভার্চুয়াল কোর্ট ব্যবস্থা চালুর আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। আদেশে বলা হয়, পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত ভার্চুয়াল ব্যবস্থায় জামিন শুনানি, অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া নিম্ন আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। অপর এক আদেশে এনআই অ্যাক্ট ও ফৌজদারি আপিল মামলা ভার্চুয়াল ব্যবস্থায় দায়ের করা যাবে মর্মে আদেশ জারি হয়।












