বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন বিষয়ে আগেও কথা বলেছি। কেন সেটি হয়নি তা দেখব বলেছিলাম। আজকেও বলছি বিষয়টি বিবেচনা করবো, চিন্তা করে দেখবো। দীর্ঘদিনের দাবি সত্তেও কেন সার্কিট বেঞ্চ হয়নি সেটির আসল কারণ উদঘাটন করতে হবে। আদৌ সার্কিট বেঞ্চের প্রয়োজন আছে কী না তাও দেখতে হবে। ভারতের আন্দামান, জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ রয়েছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত চারজন বিচারপতিকে আন্দামান ও জলপাইগুড়িতে পাঠাবো। তারা দেখে আসবেন। সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ–আলোচনা করে দেখবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে বিচারকাজ পরিচালনায় আমাদেরও খুব হিমশিম খেতে হয়। আমাদের অনেক কাজ করতে হয়। সারাদিন কাজ করি। সবচেয়ে বেশি মামলা বাংলাদেশে নিষ্পত্তি হয় বলেও প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ১৯৮২ সালে সরকার কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ঢাকাতে স্থায়ী বেঞ্চ করেছিল। এখন চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ করা হলে অপর পাঁচটি জেলাও চাইবে। গতকাল চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এসব কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি দেশের অন্যতম ঐতিহাসিক আইনজীবী সমিতি। এ বার থেকে অসংখ্য প্রথিতযশা আইনজীবীর সৃষ্টি হয়েছে। আপনারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইনজীবী হয়েছেন। এ জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। বিচার প্রার্থীর মনে দ্বিধা যাতে না জন্মায় সেভাবে কাজ করতে হবে। বিচার বিভাগের সম্মান রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব। অসম্মান হয় এমন কাজ করা যাবে না। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষা করা আইনজীবী ও বিচারকদের দায়িত্ব বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়, আইন অমান্যকারীকে অবশ্যই আইনের আওতায় আসতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মামলা জটসহ নানা সমস্যার বিষয় লিখিতভাবে আপনারা (আইনজীবী সমিতি) সুপ্রিম কোর্ট বরাবর দিবেন। বিচারকের অপ্রতুলতা রয়েছে তা সত্য। এ বিষয়ে আমরা কাজ করব। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি জে বি এম হাসান, বিচারপতি মাহমুদুল হক, বার কাউন্সিলের সদস্য এএসএম বদরুল আনোয়ার, চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমদে ভুঞা ও চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুননেছা। আরো উপস্থিত ছিলেন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সহিদুল ইসলাম, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল আলম, জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী ও মহানগর পিপি আব্দুর রশিদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক।