চট্টগ্রামে পিডিবির ১৫ লাখ গ্রাহকের মধ্যে প্রি–পেইড মিটারের আওতায় এসেছে সাড়ে ১১ লাখ গ্রাহক। অবশিষ্ট সাড়ে ৩ লাখ গ্রাহককেও প্রি–পেইড মিটারের আওতায় আনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগে প্রি–পেইড মিটার প্রকল্পের পিডি (প্রকল্প পরিচালক) চট্টগ্রাম থাকলেও এখন ঢাকা থেকে এই প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান পিডিবির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। এদিকে পিডিবির প্রি–পেইড মিটার নিয়ে কিছু কিছু গ্রাহক তাদের ভোগান্তির কথা জানালেও পিডিবি বলছে ভিন্ন কথা; বুয়েট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত প্রি–পেইড মিটারে হয়রানির কিছুই পাননি বলে জানান প্রকৌশলীরা।
এদিকে প্রি–পেইড মিটার প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে পিডিবির রাজস্ব আয় বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। সারাবছর (শীতকাল ছাড়া) পিডিবির রাজস্ব আয় গড়ে ৪০০ কোটি টাকার উপরে বলে জানান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (উত্তর) শহীদুল ইসলাম মৃধা। তিনি বলেন, এখন শীতকালে একটু কম হয়। কারণ শীতকালে বিদ্যুৎ ব্যবহার কম। এখন গড়ে ৩০০ কোটি টাকার মত। শীতকাল ছাড়া অন্যান্য সময়ে ৪০০ কোটি টাকার উপরে রাজস্ব হয়ে থাকে।
চট্টগ্রামে পিডিবির ১৫ লাখ গ্রাহকের মধ্যে এই পর্যন্ত সাড়ে ১১ লাখ গ্রাহক প্রি–পেইড মিটারের আওতায় এসেছে বলে জানান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পশ্চিম) একেএম মামুনুল বাশরী। প্রি–পেইড মিটারের কার্যক্রম চলমান জানিয়ে তিনি বলেন, আগে এই প্রকল্পের চট্টগ্রামে পিডি ছিলেন। এখন ঢাকা থেকে এই প্রকল্প পরিচালত হচ্ছে। যে সব গ্রাহক প্রি–পেইড মিটারের আওতায় আসেনি সেগুলোর কাজ চলমান রয়েছে।
একেএম মামুনুল বাশরী বলেন, বিদ্যুতের প্রি–প্রেইড মিটারের কারণে পিডিবির রাজস্ব আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। কারণ আগে মানুষ বিদ্যুতের অপচয় করতো। এখন প্রি–পেইড মিটার হওয়াতে আর অপচয় করে না। অপচয় অনেক কমে গেছে। আগে গ্রাহকদের বিল দেয়ার ভোগান্তি ছিল। মিটার রিডাররা মিটার না দেখে বিল করেছে এমন অভিযোগ নিয়ে প্রতিদিন আমাদের কাছে (বিদ্যুৎ অফিসে) শত শত অভিযোগ আসতো। এখন আর সেই অভিযোগ নেই। গ্রাহক তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী কার্ড রিচার্জ করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। তাদের বিল দেয়ার কষ্ট অনেক কমে গেছে। এখন আমাকে–আপনাকে যদি বলা হয়, প্রি–পেইড মিটার বাদ দিয়ে আগের মিটারে যেতে, আপনি–আমি কেউ যাব?
প্রি–পেইড মিটার নিয়ে যারা অভিযোগ করছেন তাদের ব্যাপারে প্রকৌশলী একেএম মামুনুল বাশরী বলেন, যারা প্রি–পেইড মিটার ব্যবহার করতে জানেন না তারা প্রি–পেইড মিটার নিয়ে অভিযোগ করছেন। এই প্রি–পেইড নিয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে বুয়েটের তিনজন শিক্ষক এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই বিশেষজ্ঞ কমিটি প্রি–পেইড মিটারে গ্রাহকের হয়রানির যে অভিযোগ তা নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেছেন; মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন। তাতে প্রি–পেইড মিটারে হয়রানির কিছু পাননি। এই মিটার সময়োপযোগী বলেছেন তারা।