চট্টগ্রামে দারুণ এক জয় বাংলাদেশের

বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ৪ মে, ২০২৪ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

বৃষ্টির লুকোচুরি, দফায় দফায় খেলা বন্ধ। তবে সেসব ছাপিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিং, অভিষেকে তানজিদ হাসান তামিমের হাফ সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে দারুণ এক জয় দিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টিটোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের শুরুতে তাসকিন, সাইফুদ্দিনদের দুর্দান্ত বোলিং বাংলাদেশকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেয়। এরপর তানজিদ তামিমের ব্যাটিং জয়ের সে রাস্তাটা আরো সহজ করে দেয়। গতকাল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৮ উইকেটে পরাজিত করে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিক বাংলাদেশ। দাপটের সাথে ম্যাচ জেতা যাকে বলে সেরকমই একটি ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ গতকাল। বিশ্বকাপের প্রস্তুতির এই সিরিজে এমন শুরুটা নিশ্চয় চেয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও অভিষেকে তানজিদ তামিমের হাফ সেঞ্চুরিটা নিখুঁত ছিল না। তিনটি জীবন পেয়েছেন তিনি। তবে সেটাকে কাজে লাগিয়েছেন তিনি।

টসে জিতে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে যে মোটেও ভুল করেননি টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত সেটা প্রমাণ করতে বেশি সময় নেন তার বোলাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই শেখ মেহেদী হাসানের আঘাত। তার শিকার জিম্বাবুয়ে ওপেনার গ্রেইগ এরভিন। দ্বিতীয় উইকেটে জয়লর্ড গাম্বি এবং ব্রায়ান বানেট মিলে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কে জানতো তাদের ২৮ রানের জুটির পরেই নামবে ধস। ১৪ বলে ১৭ রান করা জয়লর্ডকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন সাইফুদ্দিন। পরের ওভারে রান আউট হয়ে ফিরেন ১৬ রান করা বানেট। পরের বলে অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে রানের খাতা খুলতে দেননি মেহেদী হাসান। পরের ওভারে তাসকিনের আঘাতে রানের খাতা খোলা হয়নি শিন উইরিয়ামসেরও। পরের বলে রায়ান বর্লকে ফেরান তাসকিন। সাইফুদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে লুক জংবি যখন ফিরেন তখন জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৪১ রানে ৭ উইকেট। হঠাৎ ঝড়ে ৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তখন একরকম দিশেহারা জিম্বাবুয়ে। বড় লজ্জা যখন হাতছানি দিচ্ছিল তখন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ক্লাইব মাদান্দি এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। এ দুজন লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করেন জিম্বাবুয়েকে। বাংলাদেশের বোলারদের সামনে দাঁতে দাঁত চেপে গড়ে ৬৫ বলে ৭৫ রানের মান বাঁচানো জুটি। শেষ পর্যন্ত তাসকিন এসে ভাঙ্গেন এ জুটি। ক্লাইভ মান্দাদের স্টাম্প উড়িয়ে দেন তাসকিন। তবে ফিরে আসার আগে ৩৯ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৪৩ রানের মহা মূল্যবান ইনিংস খেলে আসেন। পরের ওভারে অর্থাৎ ইনিংসের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে মুজারাবানিকে ফেরান সাইফুদ্দিন তার তৃতীয় শিকার বানিয়ে। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে আউট করলেও সাইফুদ্দিনর বলটি নো বল হওয়ায় সে যাত্রায় বেঁচে যান। তবে শেষ বলে আর শেষ রক্ষা হয়নি। রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে। ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন জুনিয়া মাসাকাদজা। আর খাদের কিনারা থেকে উঠে এসে ১২৪ রান করে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের সফল বোলার তাসকিন এবং সাইফুদ্দিন। দুজনই নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। ২টি উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদী হাসান।

১২৫ রানের সহজ লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেই শুরুতেই ধাক্কা খেল বাংলাদেশ। আবারো ব্যর্থ হলেন লিটন দাশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মুজারাবানির বলে বোল্ড হয়ে ফিরলেন লিটন। ৩ ওভারে বাংলাদেশের রান যখন ১০ তখন শুরু হয় বৃষ্টি। ৩৫ মিনিট পর আবার শুরু হয় খেলা। ফেরার ওভারেই দুবার জীবন পেলেন তানজিদ তামিম। মুজারাবানির করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলেই বল আকাশে তুলে দেন তানজিদ তামিম। কিন্তু বোলার এবং কীপার দুজনই একসাথে এসে ক্যাচটা ফেলে দেন। সে ওভারের শেষ বলে আবার বেঁচে গেলেন তানজিদ তামিম। এবার কাভারে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। এক ওভারে দুবার জীবন পেয়ে সেই মুজারাবানির উপরই চড়াও হলেন তানজিদ। তার নিজের তৃতীয় ওভার থেকে দুই ছক্কা ও এক চারে নিলেন ১৬ রান। ৪.২ ওভার পর আবার বৃষ্টির হানা। এবার খেলা বন্ধ থাকল ২৯ মিনিট। এরপর খেলা শুরু হলে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ফিরেছেন ২১ রান করে। জংবি’র বলে উইলিয়ামসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন টাইগার অধিনায়ক। এরপর অভিষেকে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তানজিদ তামিম। ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ওপেনার। অবশ্য তার আগে দ্বিতীয় উইকেটে শান্তর সাথে ৫২ রান যোগ করেন তানজিদ। এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে একেবারে হেসেখেলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন তানজিদ তামিম। দুজন মিলে তৃতীয় উইকেটে যোগ করেন অবিচ্ছিন্ন ৬৯ রান। ২৮ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। তানজিদ তামিম অপরাজিত ৪৭ বলে ৬৭ রান করে। আর তাওহিদ হৃদয় অপরাজিত ১৮ বলে ৩৩ রান করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদ্যুতের তার ছেঁড়া, অভিযোগ জানাতে ১২৩ বার ফোন!
পরবর্তী নিবন্ধতিন দিনে এলাচের দাম কমল ৫০০ টাকা