চট্টগ্রামের চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

শুক্রবার ছুটির দিন। অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ। তবুও রাত দুইটা-আড়াইটায়ও বিদ্যুতের লোডশেডিং করে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা কিংবা গভীর রাত কোনো সময়েই নিস্তার মিলছে না লোডশেডিং থেকে। চট্টগ্রামের চাহিদার অর্ধেকের মতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। দিনে-রাতে লোডশেডিং করে বাকি বিদ্যুতের চাহিদা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮শ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। গ্যাসের অভাব এবং জ্বালানি তেল সাশ্রয়ে সরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দেয়ায় পরিস্থিতি ক্রমে অসহনীয় হচ্ছে।

সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে গ্যাসের যোগানের প্রায় পুরোটাই এলএনজি-নির্ভর। এলএনজি আমদানি কমে যাওয়ায় চট্টগ্রামে গ্যাসের যোগান কমেছে। বিদেশ থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করার কথা থাকলেও কিছুটা প্রক্রিয়াগত সমস্যার কারণে বর্তমানে দৈনিক ৩৮০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এলএনজি আমদানি কমে যাওয়ায় হঠাৎ করেই সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। গতকাল চট্টগ্রামে ২০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেয়া হয়। এর সামান্য একটি অংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় করার সুযোগ হয়েছে। ফলে চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেকগুলো প্ল্যান্ট থাকলেও গ্যাসের অভাবে অধিকাংশ বন্ধ হয়ে রয়েছে। আবার যা উৎপাদিত হচ্ছে তার একটি বড় অংশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ন্যাশনাল গ্রিডে। ফলে চট্টগ্রামে সরবরাহ কমছে।

জানা যায়, চট্টগ্রামে পিক আওয়ারে বিদ্যুতের মোট চাহিদা প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট। অফপিক আওয়ারে এই চাহিদা ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে নেমে আসে। কিন্তু চট্টগ্রামে গত ক’দিন ধরে ৮শ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

ফলে শুধু দিনেই নয়, গভীর রাতেও বেড়েছে লোডশেডিং। ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ে নগরবাসীর কষ্ট বেড়েছে। চট্টগ্রামে লোডশেডিং বাড়ায় বিদ্যুতের জন্য জেনারেটরের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। প্রায় প্রতিটি আবাসন এবং অফিস ভবনে জেনারেটরের জ্বালানি খরচ চার গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। গড়ে চার হাজার টাকার ডিজেল ব্যবহার হতো এমন আবাসন ভবনগুলোতে এখন ১৬ থেকে ২০ হাজার টাকার ডিজেল লাগছে, যা জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে বড় সংকট তৈরি করছে।

এদিকে সাধারণ মানুষ, যাদের জেনারেটর বা আইপিএস সুবিধা নেই, তাদের অবস্থা খারাপ। বাসা-বাড়ি ও হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে ঠিকমতো জ্বলছে না গ্যাসের চুলা। বিঘ্নিত হচ্ছে পানি সরবরাহ ব্যবস্থাও। বিভিন্ন সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন লেগে থাকে। এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষ গাড়িতে গ্যাস নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, এলএনজি আমদানি স্বাভাবিক না হলে গ্যাস ও বিদ্যুতের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাকিস্তানকে হারিয়ে শেষটা রাঙাতে চায় বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধযাত্রীর ব্যাগে পৌনে এক কোটি টাকার দিরহাম