চট্টগ্রামেই হোয়াইট ওয়াশ

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ তে হারাল টাইগাররা

ক্রীড় প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ২৬ জানুয়ারি, ২০২১ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজে বাংলাদেশ নেমেছিল ফেবারিট হিসেবেই। প্রথম দুই ম্যাচে জেতার পর গতকাল তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামার আগে বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য ছিল হোয়াইট ওয়াশ করা। সে লক্ষ্য পূরণ করেছে বাংলাদেশ। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ তে হারাল। চট্টগ্রামেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দাঁড়াতে দেয়নি টাইগাররা। যদিও তাদের ব্যাটিংয়ে বেশ উন্নতি হয়েছে। ১২২ আর ১৪৮ এর পর এবার ক্যারিবীয়রা করেছে ১৭৭ রান। তবে ১২০ রানের পরাজয় আর এড়াতে পারেনি।
দলের সিনিয়র ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বশীল ব্যাটিং আর বোলারদের ছন্দময় বোলিং এর অনুপম প্রদর্শনী। যার পরিণতি দারুণ আরেকটি জয়। করোনাকালে দেশের মাটিতে প্রথম সিরিজটি জিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে স্বাগত জানাল বাংলাদেশ। তামিম, সাকিব, মুশফিক এবং মাহমুদুল্লাহর হাফ সেঞ্চুরির উপর ভর করে বাংলাদেশ নিজেদের স্কোর নিয়ে গিয়েছিল তিনশর একেবারে কাছে। আর সাইফুদ্দিন, মোস্তাফিজ, মিরাজ, তাসকিনদের বোলিং তোপে সে স্কোর হিমালয় সম হয়ে দাঁড়ায় ক্যারিবীয়দের জন্য। ফলে ম্যাচ, সিরিজ সবই হারালো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
অধিনায়ক হিসেবে প্রথম মিশনেই দারুণ শুরু করলেন তামিম ইকবাল। অধিনায়কত্বের প্রথম সিরিজেই প্রতিপক্ষকে হোয়াইট ওয়াশ করল তামিমের দল। এখন টেস্ট সিরিজের জন্য অপেক্ষা। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেন লিটন দাশ। আলজারি জোসেফের বলে এলবিডব্লিউ হন লিটন। এ নিয়ে সিরিজের তিন ম্যাচেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরলেন লিটন। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অধিনায়ক তামিমের। কিন্তু বরাবরের মতো এবারেও ব্যর্থ শান্ত। টানা তিন ম্যাচেও ব্যাটটাকে হাসাতে পারলেননা শান্ত। এবার ফিরলেন ২০ রান করে। এরপর দলের দায়িত্ব নিজেদের কাধে তুলে নিলেন দলের চার সিনিয়র সদস্য। প্রথমে সাকিবকে নিয়ে ৯৩ রানের জুটি তামিমের। টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে বেশ ধীরে সুস্থে এগুচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু মনসংযোগ আর ধরে রাখতে পারলেননা টাইগার দলপতি। ফিরলেন ৬৪ রান করে। এরপর সাকিব আর মুশফিকের জুটিটা ৪৮ রানের। সাকিব ফিরলেন সিরিজে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে। তামিম ৬৪ করতে ৮০ বল খরচ করলে সাকিব ৫১ রান করেছেন ৮১ বলে। দুই বাঁহাতির বিদায়ের পর উইকেটে এবার দুই ডানহাতি। এবার ব্যাটে ঝড় তুললেন মুশফিক এবং মাহমুদুল্লাহ। দুজন গড়লেন ৫৮ বলে ৭২ রানের জুটি।
মুশফিক ফিরলেন তামিমের মত ৬৪ রান করে। তবে বল খরচ করলেন ৫৫টি। সময় যতই গড়াচ্ছিল ততই যেন মাহমদুল্লার ব্যাট পরিণত হয়েছিল তলোয়ারে। এক রকম কচু কাটা করছিলেন মাহমুদুল্লাহ প্রতিপক্ষ বোলারদের। তিনিও তুলে নিলেন হাফ সেঞ্চুরি। শুধু হাফ সেঞ্চুরি নয়। তামিম আর মুশফিকের মতো ৬৪ রান করলেন এই অল রাউন্ডারও। তবে বল খরচের বেলায় তিনি ছিলেন বেশ কৃপন। মাত্র ৪৩ বলে ৬৪ রানের ইনিংসে মাহমুদুল্লাহ তিনটি চারের সমান তিনটি ছক্কাও মেরেছেন। দলকে ২৯৭ রানে পৌঁছে দিয়ে তবেই ফিরেন মাহমুদুল্লাহ অপরাজিত থেকে। ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে কিয়ন হারডিং এর উপর দিয়ে ঝড়টা একটু বেশি গেছে। এই পেসার ১০ ওভারে দিয়েছেন ৮৮ রান। তবে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন জোসেফ এবং রেইফার।
বিশাল স্কোর তাড়া করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুরুতেই ধাক্কা খায়। ইনিংসের দ্বিতীয় এবং নিজের প্রথম ওভারেই মোস্তাফিজের ধাক্কায় ফিরেন ওটলে। অপর ওপেনার এমব্রিসকেও ফেরান মোস্তাফিজ। এরপর বনার এবং রবম্যান পাওয়েল চেষ্টা করেছিলেন বাংলাদেশের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলার। কিন্তু তাদের সফল হতে দেয়নি সাইফউদ্দিন এবং সৌম্য সরকার। মূলত সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজ এবং মিরাজের বোলিং তোপে ছারখার হয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন। তবে চট্টগ্রামে এসে নিজেদের ব্যাটিংয়ে খানিকটা উন্নতি করতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে আগের দুই ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও পুরো ৫০ ওভার খেরতে পারেনি ক্যারিবীরা। গতকাল অল আউট হয়েছে ৪৪.২ ওভারে। তবে তার আগে তুলে ফেরেছে ১৭৭ রান। আর সেটা সম্ভব হয়েছে বনারের ৩১, পাওয়েলের ৪৭ এবং জোসেফের ২৭ রানের কল্যাণে। বাংলাদেশের পক্ষে সাইফউদ্দিন নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ এবং মিরাজ। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মুশফিক আর সিরিজ সেরা সাকিব আল হাসান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রত্যাশিত জয়ে বাংলাদেশের ‘৩০’
পরবর্তী নিবন্ধগণসংযোগে ভিড়, সড়কে যানজট