চকরিয়ার ডুলাহাজারায় ডাকাত প্রতিরোধ অভিযানে গিয়ে ছুরিকাঘাতে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন হত্যার ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত ৬ জনকে আটক করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ সময় ২টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, বিভিন্ন ধরনের ১১ রাউন্ড গুলি, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি, একটি পিকআপ এবং একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এদিকে সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যা ও অস্ত্র–গোলাবারুদ উদ্ধারের ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যার পর চকরিয়া থানায় দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে। তম্মধ্যে সেনা কর্মকর্তা হত্যায় বাদী হয়েছেন সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. হারুনর রশীদ এবং অস্ত্র উদ্ধারের মামলায় বাদী হয়েছেন থানার উপ–পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর। দুই মামলাতেই এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ১৭ জনকে। অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়েছে আরও ৭–৮ জনকে। ইতোমধ্যে আটক ৬ জনকে এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদেরকে উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী।
আইএসপিআর এর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কঙবাজার জেলার চকরিয়ায় ডাকাতি প্রতিরোধ অভিযানে শহীদ হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন (২৩)। ২৪ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ৩টার দিকে চকরিয়া এলাকায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে শহীদ হন তিনি। পরে ওই এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে চিরুনি অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত ৬ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন মো. বাবুল প্রকাশ (৪৪), মো. হেলাল উদ্দিন (৩৪), মো. আনোয়ার হাকিম (২৮), মো. আরিফ উল্লাহ (২৫), মো. জিয়াবুল করিম (৪৫) ও মো. হোসেন (৩৯)।
বিডিনিউজ সূত্রে জানা যায়, বাবুল প্রকাশকে এই ঘটনায় মূল অর্থ যোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। এতে আরো বলা হয়, আটকদের মধ্যে চার জন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং দুই জন তথ্য দিয়ে তাদেরকে সহায়তা করার কথা স্বীকার করেছেন। এই ছয়জনের মধ্যে বাবুল প্রকাশ লেফটেন্যান্ট তানজিমকে ছুরিকাঘাত করেছিল বলে প্রাথমিক স্বীকারোক্তি দিয়েছে, বলা হয় আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া দৈনিক আজাদীকে জানান, সেনাবাহিনীর অভিযানে আটক ৬ জনকে হস্তান্তর ও উদ্ধারকৃত অস্ত্র–গুলিসহ জব্দকৃত মালামাল থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। পরে সেনা কর্মকর্তা হত্যা ও অস্ত্র–গোলাবারুদ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলে জন্মগ্রহণকারী তানজিম ছারোয়ার নির্জন পাবনা ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি মিলিটারি একাডেমি থেকে ৮২তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সঙ্গে কমিশন লাভ করেন।