চকরিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে চিংড়ি জোন এলাকায় ঘের দখল, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা অপকর্মের হোতা বেলাল উদ্দিনসহ চার অস্ত্রধারী ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ। তম্মধ্যে রয়েছে ছোট–বড় ১০টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫২ রাউন্ড গুলি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এই তথ্য গণমাধ্যমকে জানান র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
এতে জানানো হয়, ১ জুলাই সোমবার রাতে চকরিয়ার কোনাখালী এলাকায় ডাকাত–সন্ত্রাসীদের আস্তানায় এই অভিযান চালায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব–১৫। এসময় গ্রেপ্তার হয়– চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের বাসিন্দা ও চকরিয়ার চিংড়ি জোনের ডাকাত–সন্ত্রাসীদের নিয়ে গঠিত বাহিনী প্রধান বেলাল হোসেন (৪৫), তার দুই ভাই কামাল আহম্মেদ (৪২) ও আবদুল মালেক (৩২)। তারা ওই এলাকার আকবর আহম্মেদের ছেলে। এছাড়াও গ্রেপ্তার করা হয় সহযোগী একই এলাকার মৃত জহির আহমদের ছেলে নুরুল আমিনকে (৩৫)।
র্যাবের কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাকৃতরা জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। বেলাল, কামাল ও মালেক তারা আপন তিন ভাই। তারা অস্ত্রধারী ডাকাতদের নিয়ে ‘বেলাল বাহিনী’ গড়ে তুলে চিংড়ি জোন এলাকায় মাছের ঘের দখল, লুটতরাজ, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। এই বাহিনীর সশস্ত্র ডাকাত সংখ্যা ১৮ থেকে ২০ জন। তারা দীর্ঘদিন ধরে কঙবাজারের চকরিয়াসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জমি দখল, চিংড়ি ঘের দখল, লবণের মাঠ ও আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। সাম্প্রতিক সময়ে চিংড়ি জোনে দখল, বেদখল, ডাকাতিসহ নানা অপকর্মের সঙ্গেও জড়িত ছিল এসব ডাকাত–সন্ত্রাসী।
র্যাব আরও জানায়, বেলাল একজন দুর্ধর্ষ ও চিহ্নিত অস্ত্রধারী ডাকাত। সে এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জমি দখল, চিংড়ি ঘের দখল, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। তার বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় ২টি হত্যা ও একটি বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে মোট ৯টি মামলা রয়েছে। এছাড়া কামাল পেশায় একজন কৃষক এবং পাশাপাশি ডাকাত চক্রের সদস্য। সে গ্রেপ্তার বেলালের আপন ভাই এবং তার অন্যতম সহযোগী। তার বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি পুলিশ এ্যাসল্ট ও একটি অপহরণসহ মোট ৬টি মামলা রয়েছে। বেলালের আরেক ভাই মালেক পেশায় একজন চিংড়ি ব্যবসায়ী। সে চিংড়ি ব্যবসার আড়ালে ডাকাতি করত। বেলালের নেতৃত্বে সে এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জমি দখলসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। তার বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় তিনটি মামলা রয়েছে। অপরদিকে নুরুল আমিন পেশায় একজন কৃষক হলেও ডাকাত চক্রের সদস্য। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।