চকরিয়ায় কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা

ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব কাল

ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া | মঙ্গলবার , ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:১০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব আগামীকাল বুধবার। দিবস দুটিকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা কক্সবাজারের চকরিয়ার ‘গোলাপ নগর’ খ্যাত বরইতলী ও হারবাং থেকে আগেভাগেই নানা প্রজাতির ফুল কিনছেন। অনেকে আগাম অর্ডার দিয়ে রেখেছেন। ফলনও হয়েছে বেশ। সব মিলিয়ে এখানকার ফুলচাষিরা মহাখুশি। এবার তারা কোটি টাকার ফুল বিক্রি করার আশা করছেন। বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের ফুলচাষিরা জানান, এখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক থাকায় বেশ খুশিমনে ফুল চাষে নামেন চাষিরা। এতে চলতি বছর পুরোদমে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসে ‘ফুলের রাজ্য’ বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে।

চকরিয়ার বরইতলী থেকে পাইকারি দরে কিনে চট্টগ্রাম মহানগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে ফুল বিক্রি করেন সুভাষ দে। তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৫১০ হাজার ফুল কেনা হয় চকরিয়ার বরইতলী থেকে। আর বিশেষ দিবসে তা কয়েকগুণ ছাড়িয়ে যায়। এবারের ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আগাম অর্ডার দেওয়া হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার গোলাপ ও গ্লাডিওলাস ফুলের। সেই ফুল ইতোমধ্যে আসাও শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার থেকে।

এবার গোলাপ ফুলের ফলন কেমন হয়েছে, জানতে চাইলে বরইতলীর আলম নগরের ফুল চাষি নাছির উদ্দিন আজাদীকে বলেন, আবহওয়া অনুকূলে থাকায় এবার গোলাপের বাগান বেশ নজরকাড়া। আমি গোলাপসহ রকমারি ফুলের চাষ যেমন করি, তেমনি গোলাপের চারাও বিক্রি করি। এতে বাড়তি আয় হচ্ছে।

কোন প্রজাতির গোলাপের চাহিদা বেশি? সেই প্রশ্নে চাষি কফিল উদ্দিন জানান, বেশি চাহিদা রয়েছে লাল গোলাপের। তবে দ্বিগুণ দাম পেলেও সাদা ও হলুদ প্রজাতির গোলাপের চাষ এখানে কম হয়। সাদা ও হলুদ প্রজাতির গোলাপের বাড়তি আকর্ষণ থাকায় যা ফলন হয় তা মুহূর্তের মধ্যেই কিনে নিয়ে যান চট্টগ্রাম, কঙবাজার, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকাররা।

কয়েকজন ফুল চাষি আক্ষেপ করে বলেন, সরকার কৃষিক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়াসহ নানাভাবে কৃষকদের সহায়তা দেয়। কিন্তু কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ফুল চাষিদের জন্য তেমন কোনো প্রণোদনা বা সুযোগুসুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় না।

বাগান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মঈনুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, দিবস উপলক্ষে চাহিদা বাড়ায় বরইতলীর শতাধিক চাষির প্রত্যেকে ফুল বিক্রি করে পর্যাপ্ত লাভের মুখ দেখছেন।

মইনুল ইসলাম আরও বলেন, একসময় টানা অবরোধহরতালের কবলে পড়ে ফুলচাষিরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। তবে বর্তমানে সেই পরিস্থিতি বদলে যাওয়ায় পুরোদমে ফুলচাষে নামেন চাষিরা। তাই আশা করছি, এবারের ভালোবাসা দিবসে গোলাপ, গ্লাডিওলাসসহ রকমারি ফুল বিক্রি হবে কোটি টাকার। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ও কঙবাজারের পাইকারি ক্রেতারা বাগানে এসে ফুল নিতে শুরু করেছেন। অনেক পাইকারের আগাম অর্ডারও দেওয়া ফুল আজ মঙ্গলবার থেকে সবকটি বাগানের সিংহভাগ ফুল বিক্রি হবে।

চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন আজাদীকে বলেন, দাপ্তরিক হিসেবে প্রায় ২০০ একর জমিতে গোলাপ এবং প্রায় দেড়শ একরে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ হয়েছে। ফুল চাষিদের প্রণোদনা বা অন্য কোনোভাবে সরকারি সহায়তা দেওয়ার বিধান না থাকলেও কৃষি দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভালোবাসা দিবসে বাগড়া দিতে পারে বৃষ্টি
পরবর্তী নিবন্ধবিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব শুরু আজ