সেবা প্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের দায়ে নগরীর আগ্রাবাদ ভূমি অফিসের অফিস সহকারী শ্রী সঞ্জীব কুমার দে নামের একজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি কোতোয়ালী থানাধীন এনায়েত বাজারের ১৪ নম্বর গোয়াল পাড়া এলাকার স্বর্গীয় ক্ষিতিশ চন্দ্র দে’র ছেলে। গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরবর্তীতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মোট দুটি ধারায় সঞ্জীব কুমার দে’কে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় তাকে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। পিপি বলেন, পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক সঞ্জীব কুমার দে’কে এ কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আদালতসূত্র জানায়, ডবলমুরিং থানাধীন দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা জেসমিন মাসরুরা জামান। যেখানে স্বামী মনিরুজ্জামানকেও অংশীদার করা হয়। এ বিষয়ে নামজারি করতে গেলে শুধু স্বামীর নামেই উক্ত সম্পদ নামজারি হয়ে যায়। পরবর্তীতে তা সংশোধন করে নিজের নামও অন্তুর্ভুক্তির জন্য জেসমিন মাসরুরা জামান আগ্রাবাদ ভূমি অফিসে আবেদন করেন।
সীতাকুণ্ডের এ বাসিন্দা ও তার স্বামী আমেরিকায় বসবাস করায় নামজারি সংশোধনের কাজটি সম্পাদনের জন্য হাজী মো. শফি নামের একজনের উপর ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আগ্রাবাদ ভূমি অফিসে গেলে হাজী মো. শফির কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন অফিস সহকারী সঞ্জীব কুমার দে। কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে অফিস সহকারীর সাথে ১০ হাজার টাকা দিবেন মর্মে আপোষ করেন তিনি।
পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি দুদককে জানান। আদালত সূত্র আরো জানায়, এ বিষয়ে একটি ট্রেপ টিম গঠন করে দুদক এবং দুদক প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর একটি ফাঁদ মামলা পরিচালনা করে ১০ হাজার টাকা ঘুষের টাকাসহ সঞ্জীব কুমার দে’কে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় দুদক সজেকা চট্টগ্রাম-১ এর সাবেক সহকারী পরিচালক এইচএম আখতারুজ্জামান তাঁর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে ২০১৭ সালের ২৪ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন কার্যালয়ের তৎকালীন আরেক সহকারী পরিচালক জাফর আহমেদ। এর কিছুদিন পর ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই চার্জগঠন করে শ্রী সঞ্জীব কুমার দে’র বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।