দেড় মাস আগে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের দুবাই থেকে আসা একটি ফ্লাইটে তিনটি সিটের ভেতর লুকানো অবস্থায় ১৬০ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজনকে দু’দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে তাদের হাজির করার পর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এর আগে আদালতে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মিজানুর রহমান আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রিমান্ডে নেয়া আসামিরা হলেন, কক্সবাজার চকরিয়া থানার উত্তর লক্ষ্যারচর গ্রামের জহির আহম্মদের ছেলে মোহাম্মদ রুবেল হোসেন (৩৪) ও ফেনীর ছাগলনাইয়া উত্তর বাতানিয়া এলাকার মৃত আবদুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আবুল হোসেন (৪৫)। গত শনি ও রোববার সিআইরি পৃথক অভিযানে চট্টগ্রাম ও ফেনী থেকে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিআইডি জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘসময় ধরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে স্বর্ণ চোরাকারবারে জড়িত। দুবাই থেকে এসব স্বর্ণের চালান দেশে নিয়ে আসা হয়েছে। জানতে চাইলে তদন্ত কমকর্তা সিআইডি পরিদর্শক মিজানুর রহমান গতকাল আজাদীকে বলেন, ওই সময় বিমান যাত্রীদের পৃথক তিনটি সিট থেকে ১৬০ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়েছিল। এরমধ্যে ৩৩-এ নম্বরের একটি সিট থেকে ৪০ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার হয়েছিল। ওই সিটের যাত্রী ছিলেন মোহাম্মদ আবুল হোসেন। ২০২০ সালে আবুল হোসেন ৩২ বার দুবাই যাওয়া আসা করেছিল বলে তার পাসপোর্ট পর্যালোচনা করে জানা গেছে। তদন্তে আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দীর্ঘসময় স্বর্ণ চোরকারবারে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর ফেনীতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে ২৯-বি নম্বরের আরেকটি সিট থেকে উদ্ধারকৃত ৪০ পিস স্বর্ণের বার আনার সাথে প্রাথমিক তদন্তে রুবেল হোসেনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা। দুবাই থেকে এসব স্বর্ণের বার অভিযুক্ত ব্যক্তি সুকৌশলে লুকিয়ে দেশে এনেছিলেন বলে জানান তিনি। পরে এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, রুবেল হোসেনও দীর্ঘ সময় ধরে স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজনে বর্তমানে তাদের দু’জনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তবে একই সময় বিমানে ‘চৌদ্দ-ই’ নামে পৃথক আরেকটি সিটে উদ্ধার হওয়া ১২০টি স্বর্ণের বার চালান আনার ঘটনার সাথে এখনো কাউকে শনাক্ত করা যায়নি বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা। এটা নিয়ে আরও তদন্ত কাজ চলমান থাকার কথা জানান তিনি
মিজানুর রহমান বলেন, মামলাটির তদন্ত যখন আমাদের হাতে আসে তখন তা শুধু বিমানের সিটেই সীমাবদ্ধ ছিল। পরে তদন্তপূর্বক দ্রুততম সময়ে দু’জনকে শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জড়িতদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।