দুই লাখ টাকা চেয়ে না পেয়ে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদক মামলা দেওয়া হয়েছে–এমন অভিযোগে আদালতে মামলা হওয়ার পর দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের (বন্দর জোন) এসআই মো. মহসিন ও এএসআই মো. আজাদ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের (বন্দর জোন) উপকমিশনার আবু বকর সিদ্দিক আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন অভিযোগটি তদন্ত করা হবে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে গত সোমবার দুই লাখ টাকা চেয়ে না পেয়ে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদক মামলা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে তার খালাতো বোন সাবিনা আক্তার বাদী হয়ে নালিশি মামলাটি দায়ের করেন। তখন আদালত সাবিনার জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ জুলাই জাকিরকে গোয়েন্দা পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে জানতে পেরে বাদী নগরীর মনসুরাবাদের গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, জাকিরের কাছে থেকে তিন হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে বাদীকে বলা হয়, ১ লাখ টাকা দিলে ৪০০/৫০০ পিস ইয়াবা দিয়ে জাকিরের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে। আর ২ লাখ টাকা দিলে তাকে একেবারে ছেড়ে দেওয়া হবে। বাদীর পক্ষে তা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে গত ২৩ জুলাই মাদক আইনে নগরীর ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ধরে নিয়ে যাওয়ার পর জাকির হোসেনকে মারধর করা হয় বলেও মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়।
অভিযুক্ত এসআই মো. মহসিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে সদরঘাট থানায়ও একটি মাদক মামলা রয়েছে। ২০১৯ সালে মামলাটি দায়ের হয়। উক্ত মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও দাখিল হয়েছে। তার খালাতো বোন সাবিনা আক্তার ও সাবিনার স্বামী সাইফুল ইসলাম শাকিলও অপর একটি মাদক মামলার আসামি। ২০২১ সালে তাদের বিরুদ্ধে সদরঘাট থানায় মামলাটি দায়ের হয়।
এসআই মো. মহসিন বলেন, সাবিনাদের পরিবার মাদক কারবারি পরিবার। ২২ জুলাই অভিযান চালিয়ে জাকির হোসেনকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। মামলার বাদী এসআই জয়নাল আবেদীন। আমি উক্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত রয়েছি। আমার বিরুদ্ধে মামলায় যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়।