গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানীর গাড়িবহরে আওয়ামী লীগের কর্মী–সমর্থকদের হামলায় একজন নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এসময় কমপক্ষে ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। নিহত শওকত আলী দিদার (৪০) স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক। খবর বিডিনিউজের।
এ ঘটনায় আহত এসএম জিলানী, তার স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না, রাজু বিশ্বাস, মাহাবুব খান মুরাদ, লিন্টু মন্সী, গোপালগঞ্জের সালমান সিকদার, সুজন সিকদার, সবুজ সিকদার, ঢাকার মতিঝিল এলাকার নাসির আহমেদ মোল্লাসহ ১৬ জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ও তিন জনকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অন্যরা স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে এসএম জিলানী ও তার স্ত্রী রওশন আরা রত্না এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বাদশার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আহত হয়ে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জিলানী ও তার স্ত্রীসহ ১৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। অধিকাংশের মাথাসহ শরীরে বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্রের কোপ রয়েছে। তাদের সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি বলেন, এদের মধ্যে তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ৭২ ঘণ্টা না গেলে তারা শঙ্কামুক্ত কিনা তা বলা যাবে না।
এদিকে এ ঘটনার সময় গোপালগঞ্জের সময় টিভির ক্যামেরাপারসন এইচএম মানিকের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আহতদের মধ্যে মানিক ও ঘোনাপাড়া বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগের সমর্থক রোমান মোল্লা ছাড়া বাকিরা বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা ও গোপালগঞ্জের নেতাকর্মী।
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিক উজ্জামান বলেন, বিকালে তাদের গাড়িবহর সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া পৌঁছলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের দুই–তিনশ নেতাকর্মী মাইকিং করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। এ সময় তারা গাড়ি ভাঙচুর ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে শওকত আলী দিদার নিহত ও বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিনের অভিযোগ, আমরা বেদগ্রামের মোড়ে শান্তিপূর্ণ পথসভা শেষ করে এসএম জিলানীর বাবা–মায়ের কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলাম। ঘোনাপাড়া মোড়ে পৌঁছলে গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিন মোল্লা, গোবরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জিকরুল ফরিক, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলিমুজ্জামান ও হাসান মোল্লার নেতৃত্বে আমাদের গাড়িবহরে হামলা করা হয়।