নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার রৌফাবাদ এলাকায় এক কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এরপর পুলিশ ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। রৌফাবাদ কলোনির বিহারী মসজিদের পাশে মাহবুব আলম (৬৫) ও নিলীমা শামীম (৫৫) দম্পত্তির বাসায় কাজ করত ওই গৃহকর্মী। ঘটনার পর এ দম্পত্তি পালিয়ে গেছেন বলে জানায় পুলিশ।
জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় বাসার ছাদের গাছে পানি দেওয়ায় ওই কিশোরীকে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন অভিযুক্ত নীলিমা শামীম। মারধরের ঘটনাটি পাশের বাসার এক ব্যক্তি ভিডিও করে বেসরকারি এক টেলিভিশনের প্রতিবেদককে পাঠান। এরপর পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারের সময় ওই গৃহকর্মী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, তাকে বেতন দেয় না। আম্মু অসুস্থ থাকতে এখানে (নিলীমার বাসায়) দিয়ে গেছে। এখানে থাকি–খাই। আম্মু–আব্বু মারা গেছে। তাকে বিভিন্ন সময়ে মারধর করা হয়েছে জানিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখান। লোহা গরম করে শরীরে লাগিয়ে দেয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, ওই কিশোরী সাত বছর ধরে নিলীমা শামীমের গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছিল। তার বাবা মারা গিয়েছেন। তার মা তাকে অভিযুক্তদের বাসায় দিয়ে যান। এর কিছুদিন পর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার মা মারা যান। কিছুদিন ভালো ব্যবহার করলেও ওই কিশোরীর ওপর অত্যাচার শুরু করেন অভিযুক্তরা। দিনদিন সে অত্যাচার বাড়তে থাকে। ভিকটিম কিশোরীকে কারণে–অকারণে মারধর করতেন তারা। রান্নায় কোনো ভুল হলেই নীলিমা শামীম ওই কিশোরীকে স্টিলের খুন্তি আগুনে গরম করে শারীরিক নির্যাতন করতেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি–মিডিয়া) কাজী তারেক আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ গিয়ে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের চিহ্ন আছে। অভিযানের খবর পেয়ে ওই বাসার মালিক ও তার স্ত্রী পালিয়েছেন। তাদেরকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। কিশোরীটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।