গুইমারায় সহিংসতা, নিহত ৩

১৩ সেনাসদস্য ও তিন পুলিশসহ আরো অনেকে আহত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৭:০৬ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়ির গুইমারায় ১৪৪ ধারার মধ্যে সহিংসতা হয়েছে। এতে ৩ জন নিহত হয়েছেন। মারমা এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে শনিবার ভোর থেকে জুম্মছাত্র জনতার ব্যানারে অবরোধের কারণে চট্টগ্রামখাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়িরাঙামাটি ও খাগড়াছড়িসাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভের মধ্যে পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় শনিবার দুপুর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

অবরোধ চলাকালে গতকাল রোববার বেলা ১টার দিকে উপজেলার রামেসু বাজারে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান পুড়ে যায় এবং বাজারের পাশে থাকা বসতঘরও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাজারটি চট্টগ্রামখাগড়াছড়ি সড়ক থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে। সেখানে আগুন দেয়ার ভিডিও ও ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর বিডিনিউজ ও বাসসের।

রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গুইমারা উপজেলায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিনজন পাহাড়ি নিহত এবং মেজরসহ ১৩ জন সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ তিনজন পুলিশ সদস্য এবং আরো অনেকে আহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ মর্মে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অতি শিগগির তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। ততক্ষণ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করে শান্ত থাকার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ বলেন, ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে তিনজন যুবক মারা গেছেন। কয়েকজন আহত আছেন। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা গুলিতে না ঢিলের আঘাতে মারা গেছে, সেটা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা হবে। গুইমারার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান তিনি।

খাগড়াছড়ি জেলার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ সাবের বলেন, গুইমারা থেকে তিনজন পুরুষের লাশ এসেছে হাসপাতালে। লাশগুলো মর্গে রাখা হয়েছে। আগামীকাল (আজ) সকালে ময়নাতদন্ত করা হবে। গুইমারার ঘটনায় আহত আরো চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান তিনি।

এদিকে জুম্ম ছাত্রজনতার এক ফেইসবুক পোস্টে বলা হয়, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তিন পার্বত্য জেলায় সড়ক অবরোধ অনির্দিষ্টকাল চলবে। সকল পর্যটন কার্যক্রমও এ সময় বন্ধ থাকবে।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, গতকাল বিকালে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, গুইমারায় দুই পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি শুনে আমি গুইমারার দিকে যাচ্ছি। আপনাদের বিস্তারিত পরে জানাব।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও পৌরসভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল সকাল থেকে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এছাড়া খাগড়াছড়ি জেলা সদরে মোতায়েন করা হয়েছে সাত প্লাটুন বিজিবি। সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে চলাচলকারী মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বন্ধ রয়েছে শহরের দোকানপাট। শনিবার রাতে সাজেকে আটকা পড়া ২ হাজারের বেশি পর্যটককে সেনা নিরাপত্তায় গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুলাই গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে রেমিট্যান্স
পরবর্তী নিবন্ধযমুনা অয়েলের এক লাখ লিটার ডিজেল গায়েব!