গাড়ির চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা

২ লাইন বাড়ানোর কাজ ব্যাহত হয় বৃষ্টিতে, সময়সীমা অর্ধেক শেষ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৭ মে, ২০২৫ at ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ কক্সবাজার ও বান্দরবানগামী ২৫ থেকে ২৭ হাজার গাড়ির চাপ সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় টোলপ্লাজার কর্মকর্তাকর্মচারীদের। দিন দিন এই রুটে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে।

এই রুটের ড্রাইভার ও পরিবহন শ্রমিকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, ২০১০ সালে যখন এই সেতুর উদ্বোধন করা হয় তখন এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ৮ হাজারের মত যানবাহন চলাচল করতো। ২০১০ সালের পরবর্তী ১৫ বছরে এই সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তিন গুণের বেশি। কিন্তু টোলপ্লাজা এলাকায় ৪ টি করে ৮ বুথের সংখ্যা (চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দিকে যেতে ৪টি বুথ এবং চট্টগ্রাম শহরে আসার দিকে ৪টি বুথ) দীর্ঘ এত বছরে আর বাড়েনি। যার কারণে টোল প্লাজা এলাকায় প্রতি বৃহস্পতিবার বিকালের পর থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে যানজট লেগে থাকে।

বর্তমানে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে বলে জানান শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজার ইজারাদার প্রতিষ্ঠান সেলভ্যান জেভির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুমন ঘোষ। তিনি বলেন, এখন বৃষ্টির দিন তাই গাড়ির চাপ একটু কম। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিফেব্রুয়ারি এই সময়ে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। তখন মানুষ প্রতিদিন পিকনিক কিংবা ভ্রমণে যায়। তখন গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যায়। ওই সময়ে গাড়ির সংখ্যা বেড়ে ২৭ হাজারের মত হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোলপ্লাজা এলাকায় দুই পাশে ৪ টি করে ৮টি বুথ রয়েছে। তারপরও প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ যানজটের কারণে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

টোলপ্লাজা এলাকার নিত্য যানজট নিরসনে দুই পাশে আরও ১টি করে দুটি লাইন বাড়নোর উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রাম অঞ্চল। গত জানুয়ারিতে টোলপ্লাজার দুই পাশে দুই লাইন বাড়ানোর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু হলেও এখনো কাজ তেমন দৃশ্যমান হয়ে উঠেনি। এখন বৃষ্টির কারণে নিয়মিত কাজ করতে পারছে না শ্রমিকরা।

জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে জানা গেছে, ২০২৪২০২৫ অর্থবছরে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর টোলপ্লাজা সংলগ্ন অ্যাপ্রোচ রোডে আরসিসি রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজটি দুটি ধাপে সম্পন্ন হবে বেস টাইপ, ডেন্স বিটুমিনাস সার্ফেসিংবেস কোর্স এবং ডেন্স বিটুমিনাস সার্ফেসিংওয়্যারিং কোর্স।

প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৯০ লাখ ৫৯ হাজার ২৫৯ টাকা ৫৫৬ পয়সা। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ১৮০ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। দুই লাইন বর্ধিত করণের কাজ শুরু হয়েছে গত ফেব্রুয়ারি থেকে। কাজের ১৮০ দিনের সময়সীমার মধ্যে ৯০দিনের মত চলে গেছে। এই প্রকল্পের কাজ করছে নারায়ণগঞ্জ জেলার মেসার্স হাসমত এন্ড ব্রাদার্স।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতুর টোলপ্লাজা এলাকায় মোট ৮টি বুথ (সেতু থেকে নেমে কঙবাজারের দিকে যেতে ৪টি বুথ এবং চট্টগ্রাম শহরে আসার দিকে ৪টি বুথ) দিয়ে টোল আদায় করা হয়। নতুন করে দুইপাশে দুটি বুথ বাড়লে তখন উভয় পাশে টোল আদায়ে বুথের সংখ্যা দাঁড়াবে ১০টি। এখন মাঝে মধ্যে যে যানজট দেখা যায়, তখন সেটিও আর থাকবে না বলে মনে করছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

টোলপ্লাজার ইজারাদার প্রতিষ্ঠান সেলভ্যান জেভির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুমন ঘোষ বলেন, টোলপ্লাজা এলাকায় যানজট নিরসনে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুই পাশে আরও দুটি লেইন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। দুটি লেইন বাড়লে আরও দুটি বুথ বাড়বে। এখন উভয় পাশে ৪টি করে ৮টির স্থলে তখন ৫টি করে ১০টি বুথ হবে। তখন যানজট তেমন থাকবে না। এখন প্রতিদিন ২৩ থেকে ২৪ লাখ টাকার মত টোল আদায় হয় বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাতের আঁধারে চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি করছিল তারা
পরবর্তী নিবন্ধনুরুল ইসলাম বিএসসি, তার স্ত্রী ও ৫ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা