গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাসের আগুনে দগ্ধদের মধ্যে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ দিন আগের ওই অগ্নি দুর্ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে এ নিয়ে ১১ জনের মৃত্যু হল। আরও ১৮ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হোসাইন ইমাম জানান, আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় ৭ বছর বয়সী তাওহিদের মৃত্যু হয়। শরীরের ৮০ শতাংশ পোড়া নিয়ে সে আইসিইউতে ভর্তি ছিল। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় তাওহিদের চার বছরের বোন তৈয়বা মারা যায়। তাদের খালু রিফাত জানান, শিশু দুটির বাবা সজল মিয়া পরিবহন শ্রমিক, আর মা সুমাইয়া পোশাক কারখানায় কাজ করেন। দুই সন্তানকে হারিয়ে তারা শোকে নির্বাক হয়ে আছেন। খবর বিডিনিউজের।
গত ১৩ মার্চ ইফতারের আগে আগে গ্যাসের আগুনে বিপুল সংখ্যক মানুষের দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলিরচালা এলাকায়। রিফাত জানান, মা সুমাইয়া তখন ইফতার তৈরি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, ঠিক ওই সময়ে হইচই শুনে বাইরে গলিতে এসে দাঁড়ায় তাওহিদ ও তৈয়বা। এ সময় গ্যাসের আগুনে পুড়ে যায় গলিতে থাকা সবাই, দগ্ধ হয় শিশু দুটিও। শিশু দুটির খালু বলেন, তৈয়বার মৃত্যুর পর সবাই বুঝে গিয়েছিলেন তাওহিদও বাঁচবে না। তবুও চেষ্টায় ত্রুটি ছিল না। তাদের বাবা–মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই কারও।
এর আগে গত রোববার রাত থেকে গতকাল সোমবার সকালের মধ্যে গোলাম রাব্বী (১১), সোলায়মান (৯), জহিরুল ইসলাম (৪০) ও মোতালেব (৪৮) মারা যান। তারা সবাই আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস ও বার্ন ইনস্টিটিউটের এক চিকিৎসক জানান, একটা ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বের হচ্ছিল। বাসার মালিক সেটি বাইরে রেখে গেলে সেটি ঘিরে কিছু উৎসুক লোকজন দাঁড়িয়েছিল। এ সময়েই পাশের আরেকটি বাসায় চুলা ধরাতে গেলে পুরো রাস্তায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতেই তারা সবাই দগ্ধ হয়। ওই ঘটনার পর মারাত্মকভাবে দগ্ধ ৩২ জনকে রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। বার্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর শংকর পাল জানান, গাজীপুরের ঘটনায় দগ্ধ ১৮ জন এখন বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তাদের কারো অবস্থাই ভালো নয়।












