গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে সরকারের অবস্থানের প্রতিবাদে আগেভাগেই পদ ছেড়েছেন নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প। গত শুক্রবার তিনি সাংবাদিকদের জানান, গাজা নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বাড়তি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সরকার সমর্থন দেয়নি। বাড়তি পদক্ষেপ নেওযার বিষয়ে আমি মন্ত্রিসভায় বাধার মুখে পড়েছি, বলেন ভেল্ডক্যাম্প। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথা জানান তিনি।
তার উদ্যোগে এর আগে চরম–ডানপন্থি ইসরায়েলি মন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ও ইতামার বেন–গভিরের ওপর নেদারল্যান্ডসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছিল। তারা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের উসকে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। তাছাড়া, ভেল্ডক্যাম্প নেদারল্যান্ডস থেকে ইসরায়েলে জাহাজের যন্ত্রাংশ রপ্তানির তিনটি অনুমতিপত্রও বাতিল করেছিলেন।
গাজা পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে তিনি তখন বলেছিলেন, যন্ত্রাংশগুলোর অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহার হতে পারে। সাংবাদিকদের ভেল্ডক্যাম্প বলেছেন, গাজায় যা ঘটছে তা আমিও দেখতে পাচ্ছি। গাজা সিটিতে হামলা হতে দেখছি। পশ্চিম তীরে কী ঘটছে সেটাও দেখছি। সেখানে বিতর্কিত বসতি ই১ এ ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত এবং পূর্ব জেরুজালেমে কী হচ্ছে, তা দেখছি। খবর বিডিনিউজের।
ভেল্ডক্যাম্পের পদত্যাগে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদটি শূন্য হল। এমন সময়ে তিনি পদত্যাগ করলেন, যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। গত ৩ জুন নেদারল্যান্ডসের সরকার ভেঙে পড়ে। ফলে এখন দেশটি একটি তত্ত্বাবধায়ক সংখ্যালঘু সরকারের অধীনে চলছে, যা অক্টোবরে নির্বাচন শেষে নতুন জোট সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।
এর মধ্যে ইসরায়েল গাজা সিটি দখলে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকদের দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া, হামাসকে ভেঙে দেওয়া এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যেই এই অভিযান বলে জানিয়েছে তেলআবিব। শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দিনই এক বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকায় মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে ইসরায়েল এই প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা ও পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
ওদিকে চলতি সপ্তাহে পশ্চিম তীরে নতুন একটি বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল। এই বসতি নির্মাণ হলে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিকৃত ভূখণ্ড দ্বিখণ্ডিত হয়ে পড়বে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পর্যবেক্ষকরা।