গাজার হাসপাতালে বিমান হামলা, নিহত ৫০০

প্রায় ৪ হাজার মানুষ এ হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিল ।। ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে ৮০ শতাংশ ।। ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে আরও কয়েকশ হতাহত

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আল আহলি আরব হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চালানো এই হামলায় ব্যাপক হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরা জানিয়েছেন, হামলায় অন্তত ৫০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও কয়েকশ হতাহত রয়েছেন। চিকিৎসাকর্মীরা এখন মরদেহ খুঁজে বের করছেন। গাজায় হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি যুদ্ধাপরাধ। হাসপাতালটি শত শত আহত ও অসুস্থ মানুষের আশ্রয়স্থল ছিল। হাসপাতালটি ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতাল নামেও পরিচিত ছিল। এটি একই সঙ্গে যুদ্ধে ঘরবাড়ি হারানো মানুষের আশ্রয়স্থল এবং রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হতো।

আল জাজিরা বলেছে, কোনও সতর্কবার্তা ছাড়াই হাসপাতালে হামলা চালানো হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ ঘটনার পর পশ্চিম তীরের শহরগুলোতে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। এদিকে হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটির মহাপরিচালক এক্স নেটওয়ার্কে এক পোস্টে এ নিন্দা জানান। একে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। হামলার নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। নিন্দা জানিয়েছে মিশর এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাহায্য সংস্থা মেডগ্লোবালের জাহের সাহলুল এ হামলাকে কোনো চিকিৎসা স্থাপনায় ২১ শতকের সবচেয়ে বাজে আক্রমণ বলে অভিহিত করেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরায়েল ও জর্ডান সফরের আগের দিন এই হামলা হলো। আজ বুধবার ইসরায়েলে পৌঁছার কথা রয়েছে তার। তেল আবিব থেকে তিনি জর্ডান যাবেন। সেখানে কয়েকটি আরব দেশের নেতার সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। ওই হাসপাতালে কর্মরত একজন চিকিৎসক বিবিসিকে বলেছেন, প্রায় চার হাজার মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল। বিমান হামলার পর হাসপাতালের ৮০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং কয়েকশ মানুষ হতহাহত হয়েছে বলে তার ধারণা। বার্তা সংস্থার এপির ছবিতে দেখা গেছে, হামলার পর হাসপাতালে আগুন, ছিন্নভিন্ন কাঁচ এবং মানুষের দেহের বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, হাসপাতালে হামলার বিষয়ে তাদের কাছে তথ্য নেই। তথ্য পেলে জানানো হবে।

এপি জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ৫০০ হলে ২০০৮ সালের পর গাজায় এটিই হবে ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।

এর আগে গতকাল আলমাগাজি শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরায়েলফিলিস্তিন সংঘাত আজ ১১তম দিনে এই হামলা হলো। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হামাসের হামলায় এক হাজার ৪০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিন হাজার ৫০০ জন। অপর দিকে ইসরায়েলি বোমা হামলায় দুই হাজার ৮০৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দশ হাজার ৮৫৯ জন। তাছাড়া পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছেন ৫৭ জন। এক হাজার ২০০ জন আহত হয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবানে আজ পরিবহন ধর্মঘট
পরবর্তী নিবন্ধশহীদ শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন আজ