ইসরায়েলি বিমান হামলায় তাদের সাত কর্মী নিহত হওয়ার পর ফিলিস্তিনের ছিটমহল গাজায় কার্যক্রম স্থগিত করেছে ত্রাণ সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন (ডব্লিউসিকে)। এরপর থেকে বহু ফিলিস্তিনি হতভম্ব হয়ে ভাবছেন তাদের পরিবারগুলোকে কীভাবে খাওয়াবেন। ডব্লিউসিকের সঙ্গে কাজ করা আরেকটি মার্কিন ত্রাণ সংস্থা আনেরাও তাদের কার্যক্রমণ বন্ধ করে রেখেছে, কারণ তাদের স্থানীয় কর্মী ও কর্মীদের পরিবারগুলো বাড়তে থাকা ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
দুই ত্রাণ সংস্থা মিলে গাজায় প্রতি সপ্তাহে ২০ লাখ খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করতো বলে বিবিসি জানিয়েছে। ইসরায়েলে কঠোর অবরোধ, ত্রাণ প্রবেশে বাধা ও চলমান সহিংসতায় গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে প্রায় ১১ লাখ দুর্ভিক্ষের মুখে আছে বলে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে। ডব্লিউসিকের কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে সাইপ্রাস থেকে গাজায় সমুদ্রপথে ত্রাণ আসার একটি করিডোরের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে।
আসন্ন দুর্ভিক্ষ এড়াতে গাজার উত্তরাংশে ত্রাণ প্রবেশের সুবিধার্থে গত মাসে করিডোরটি স্থাপনে ডব্লিউসিকে সহায়তা করেছিল। সোমবার রাতে ত্রাণ সরবরাহের জন্য ইসরায়েলের নির্ধারিত একটি উপকূলীয় সড়কধরে ডব্লিউসিকের একটি গাড়িবহর দক্ষিণ দিকে যাওয়ার সময় বিমান হামলার শিকার হয়।
এর কিছুক্ষণ আগে ডব্লিউসিকে একটি বার্জ থেকে শতাধিক টন খাদ্য সহায়তা নামিয়ে গাজার দিয়ের আল–বালাহ এলাকার একটি গুদামে রেখেছিল। বার্জটি ত্রাণবাহী চারটি জলযানের সঙ্গে গাজার উপকূলে এসেছিল। কিন্তু ত্রাণ কর্মীদের ওপর ইসরায়েলের হামলার পর আরও ২৪০ টন খাদ্য ত্রাণসহ অপর জাহাজগুলো সাইপ্রাসে ফিরে যায়।
নরওয়ের রিফিউজি কাউন্সিল সতর্ক করে বলেছে, ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের সঙ্গে যা হয়েছে তাতে পুরো ত্রাণ পদ্ধতিটিই হুমকির মুখে পড়েছে ও খাদের কিনারে এনে দাঁড় করিয়েছে। ডব্লিউসিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীকে অভিযুক্ত করে বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী জেনেবুঝেই তাদের পরিষ্কার লোগো সম্বলিত গাড়িগুলোতে হামলা চালিয়েছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করেই তারা পথে বের হয়েছিল। যে সাতজন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ব্রিটিশ, পোলিশ, অস্ট্রেলীয়, ফিলিস্তিনি ও যুক্তরাষ্ট্র–কানাডার একজন দ্বৈত নাগরিক আছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি এই হামলার ঘটনাকে গুরুতর ভুল বলে অভিহিত করেছেন আর রাতের অন্ধকারে তারা ত্রাণবহরটি শনাক্ত করতে পারেননি বলে দাবি করেছেন।