গাছ কাটার আগে অনুমতি নিতে হবে : হাই কোর্ট

| বুধবার , ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

গাছ কাটার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার শর্ত রেখে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী একটি সংগঠনের করা রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ রায় দেয়।

সারা দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও পরিবেশ দূষণ বন্ধ করে মানুষের জীবন ও সুস্বাস্থ্য রক্ষায় ২০২৪ সালে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন এইচআরপিবি জনস্বার্থে এই রিট মামলা করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৭ মে আদালত বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করে। রুলে ঢাকার দুই সিটি, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গাছ কাটা কেন মানবাধিকারের পরিপন্থি হবে না; সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪ অনুযায়ী বপন করা গাছ না কেটে ওই গাছের মূল্যের সমপরিমাণ টাকা কেন বপনকৃত ব্যক্তিদের প্রদান করা হবে না এবং গাছ কাটতে হলে সকল পর্যায়ে কেন ৭ সদস্যর কমিটির থেকে অনুমোদন নিতে আদেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। খবর বিডিনিউজের।

এইচআরপিবির পক্ষে রুলের ওপর শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল ও অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শফিকুর রহমান। রায়ের পর মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালত পরিবেশ অধিদপ্তরকে গাছ কাটার অনুমতি নেওয়ার জন্য সাত দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছে।

এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সাত দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসক, জেলা পরিবেশ কর্মকর্তা, সরকারি কলেজের অধ্যাপক, সমাজকর্মী, পরিবেশবিদ ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা সিভিল সার্জনকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে, যারা জেলা পর্যায়ের গাছ কাটার অনুমতি দেবে। পাশাপাশি জনপ্রশাসন সচিবকে আগামী সাত দিনের মধ্যে সব জেলা প্রশাসকদের একটি সার্কুলার জারি করে উপজেলা পর্যায়ে গাছ কাটার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা, এসি ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে, যারা উপজেলা পর্যায়ের গাছ কাটার বিষয়ে অনুমতি দেবে।

রায়ে বলা হয়, ২০০৪ সালের সামাজিক বনায়ন বিধিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে, যেখানে বলা থাকবে, সামাজিক বনায়ন বিধিমালা অনুযায়ী রোপণ করা গাছ কাটা যাবে না; বরং গাছের সমমূল্যে টাকা রোপণকারীকে দিতে হবে।

আদালতের রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, দেশে দিন দিন তাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় অধিক সংখ্যক গাছ সংরক্ষণ করা প্রয়োজন, ব্যাপকভাবে গাছ কাটা হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে, যা বেঁচে থাকার অধিকারকে খর্ব করবে। পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য যে পরিমাণ গাছ বাংলাদেশে থাকা দরকার সে পরিমাণ গাছ নেই এবং এই গাছগুলোকে রক্ষা করা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন বলেও আদালতে পর্যবেক্ষণে বলা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাসিনা গুম খুনের সরাসরি নির্দেশদাতা
পরবর্তী নিবন্ধ২২ বছর আগের মামলায় ৪০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধ