লেখার অগ্রভাগে যে ক’জন চট্টল মনীষার নাম সগর্বে উচ্চারণ করতে হয়, তাঁরা হলেন, বেগম উমরাতুল ফজল, বেগম ফজিলাতুল কদর, বেগম ফাহমিদা আমিন, বেগম মুশতারী শফি প্রমুখ। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ও পরবর্তীকালে বর্তমান সময় পর্যন্ত জন্মসূত্রে চট্টগ্রামের বা কর্মসূত্রে চট্টগ্রাম অবস্থানকারী নারী লেখকদের তালিকা করলে তা হবে নিম্নরূপ:
উমরতুল ফজল, বেগম মুশতারী শফী, ফাহমিদা আমিন, ফজিলাতুল কদর, বেগম রুনু সিদ্দিকী, রওশন জাহান রহমান, সাহেরা ইসমাইল, আইনুন নাহার, মমতাজ সবুর, নুরুন নাহার বেগম, জুলেখা খাতুন, রমা চৌধুরী, সালমা চৌধুরী, খালেদা হানুম, আনোয়ারা আলম, নীলুফার জহুর, ফেরদৌস আরা আলীম, ফাতেমা আলী, ফরিদা ফরহাদ, জিনাত আজম, সৈয়দা রওশন আরা রহমান, জওশন আরা রহমান, শামসুন্নাহার রহমান পরান, নীলুফার শামসুদ্দিন, দীপালী ভট্টাচার্য, নুরুন্নাহার শিরীন, শ্যামলী মজুমদার, শিরীণ আখতার, লায়লা জামান, শিপ্রা রক্ষিত দস্তিদার, রীতা দত্ত, ফেরদৌস আরা কবির, মিনু রানী দাশ, আলেয়া চৌধুরী, শুক্লা ইফতেখার, সাবিহা মুসা, মর্জিনা আখতার, এডভোকেট কামরুন নাহার, সুরাইয়া জহুর শিরীন, মিনতি বিশ্বাস, সেলিনা আখতার, তহরীন সবুর ডালিয়া, বদরুননেসা সাজু, শাহীন আনোয়ার, ডেইজী মউদুদ, করবী চৌধুরী, মৃণালিনী চক্রবর্তী, শরীফা বুলবুল, পারভীন বাশার শহীদুল্লাহ, শিরীন আরা বেগম, শাহানা আকতার, এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা, বিচিত্রা সেন, কাঞ্চনা চক্রবর্তী, মোরশেদা নাসির, আনোয়ারা বেগম টুশী, তাহেরা ফৌজি, ফেরদৌস আরা রীনু, সেলিনা শেলী, নিশাত হাসিনা শিরিন, কাজী রুনু বিলকিস, ফারজানা রহমান শিমু, ফারহানা তেহসীন, মাহবুবা চৌধুরী, রিমঝিম আহমেদ, অনুপমা অপরাজিতা, আসমা বীথি, ফারহানা আনন্দময়ী, রেহেনা বেগম রানু, শাহরিয়ার ফারজানা, সীমা কুন্ডু, ববি বড়ুয়া, সাবিনা লীন, নাসরিন সুলতানা খানম, জান্নাতুল ফেরদৌস, রুমি চৌধুরী, ডালিয়া নাহার, ফারহানা ইসলাম রুহী, শিপ্রা দাশ, রুনা তাসমিনা, সুলতানা নুরজাহান রোজী, বিভা ইন্দু, কোহিনুর শাকি, কোহিনুর আকতার ডেইজী, বনশ্রী বড়ুয়া, কাজী কামরুন নাহার, শাহীন আক্তার, সৈয়দা সেলিমা আক্তার, কানিজ ফাতিমা, নীলিমা বড়ুয়া, মেহেরুন নেছা রশীদ, মেহের আফরোজ হাসিনা, রেহেনা চৌধুরী, সৈয়দা রিফাত আকতার নিশু, সালমা বিনতে শফিক, রিতু পারভী, করুণা আচার্য, শিরিন আফরোজ, পিংকু দাশ, মহুয়া ভট্টাচার্য, রেহেনা মাহমুদ, মারজিয়া খানম সিদ্দিকা, আখতারী ইসলাম, গৌরী প্রভা দাশ, লিপি বড়ুয়া, সুমি দাশ, শিউলী নাথ, সুবর্ণা দাশ মুনমুন, রোকসানা বন্যা, চাঁদ সুলতানা নকশী, তানজিনা রাহী, মিতা দাশ, আয়েশা পারভিন চৌধুরী, শেলীনা আকতার খানম, সৈয়দা করিমুননেসা, শাহানা ইসলাম, সিমলা চৌধুরী, খালেছা খানম, তারিফা হায়দার, পুষ্পিতা সেন, প্রতিমা দাশ, শর্মিষ্ঠা চৌধুরী, শেখ বিবি কাউছার, নুসরাত সুলতানা, রেহেনা আকতার, নিগার সুলতানা, টুম্পা ভট্টাচার্য, সোমা মুৎসুদ্দী, মিতা পোদ্দার, জাহানারা মুন্নী, মোহিনী সংগীতা সিনহা, আনজানা ডালিয়া, কুমুদিনী কলি, শর্মি বড়ুয়া প্রমুখ। এদের মধ্য থেকে কয়েকজন গল্পকার–ঔপন্যাসিকের কথা এখানে আলোকপাত করার চেষ্টা করছি।
উমরতুল ফজল : ঊর্মি, উমু, উমরতুল আলম সাহিত্যিক, সাংবাদিক মাহবুব উল আলমের জ্যেষ্ঠ সন্তান। উমরতুলের মা চার সন্তান রেখে মারা গেলে বাবার দ্বিতীয় বিবাহের সূত্রে চৌদ্দ ভাইবোন এবং উমরতুলের জেঠা রেঙ্গুনে বসবাসরত শামসুল আলমের স্ত্রী, উমরতুলের মাতৃসম। বড়মা ও তাদের চার সন্তান, ছোট চাচা ওহিদুল আলমকে নিয়ে একটি দারিদ্রপীড়িত বিশাল সংসারে বেড়ে উঠেছেন। তবে, তিনি সাহিত্যিক বাবা ও মেধাবী সাহিত্যিক ক্ষণজন্মা চাচা দিদারুল আলম, ছোট চাচা কবি ওহিদুল আলমের সাহিত্য শিল্প সঙ্গীত প্রীতি ও অনুশীলনে ব্রতী। সে সময়ের প্রেক্ষাপটে মেয়েদের পক্ষে আশাতীত উদার, মুক্ত অসামপ্রদায়িক একটি বিশিষ্ট পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন তিনি। তার জেঠা শামসুল আলম রেঙ্গুনে দাঙ্গায় নিহত হন, যখন তার চার ছেলে মেয়ে নাবালক। ছোট চাচা দিদারুল আলমের সঙ্গে বন্ধুত্বের সূত্রে আবুল ফজলের সাথে এই আলম পরিবারের সংযোগ ঘটে, যা ছিল অবাধ, মুক্ত পরিবেশের পিয়াসি আবুল ফজলের জন্য জীবনের সূচনা থেকে শেষ অবধি আনন্দপূর্ণ ও সুখকর ।
ফজিলতুল কদর : আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক ইসলামি চিন্তাবিদ বেগম ফজিলতুল কদর ছিলেন একজন সুলেখক। হাসনা হেনা ছদ্মনামে তার লেখালেখির শুরু। ছড়া ও কবিতার মধ্য দিয়ে তার কাব্যপ্রতিভার স্ফুরণ ঘটলেও পরবর্তীতে তিনি গদ্য রচনায় বেশ পারদর্শিতার স্বাক্ষর রাখেন। শতদল ফোটে মুগ্ধ হৃদয়ে, হীরা মোতি পান্না ও সনেটগুচ্ছ তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। তার ঝরঝরে লেখনীর বেশ কিছু ছোটগল্প রয়েছে। মৌলিক রচনার পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি প্রচুর প্রবন্ধ লিখেছেন। দৈনিক আজাদী, পূর্বকোণ ও নয়াবাংলার এক সময় নিয়মিত লিখতেন তিনি।
ফাহমিদা আমিন : এক উজ্জ্বল ও অনুকরণীয় লেখক বেগম ফাহমিদা আমিন। অফুরাণ প্রাণশক্তি আর তীব্র সাহিত্য তৃষ্ণা তাকে নিয়ে গেছে এক আলোর পথে যিনি আমাদের কাছে এক বর্ণাঢ্য আলোকস্তম্ভের মতো। রম্য রচনায় তীব্র কটাক্ষ তীব্র রসের মাধুর্য, আবার লেখনীর মধ্য দিয়ে হাস্যরসের অবতারণা বেশ কঠিন আমরা জানি বাংলা সাহিত্যে আধুনিক অর্থে এ ধারাটি পাশ্চাত্য প্রভাবপুষ্ট। শাণিত শব্দের কারুকার্যে সমাজ ও ব্যক্তির স্ববিরোধকে নির্মল হাসির মাধ্যমে তুলে ধরাই রম্যসাহিত্যের বিশেষ কাজ। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২২টি এর মধ্যে নয়টিই ‘রম্যরচনা’। প্রথম গ্রন্থ ‘নিমমধু’ ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত এবং শেষ গ্রন্থ ‘সাজতে সাজতে ফিঙ্গে রাজা’ প্রকাশিত ২০১০ সাল ‘সাজতে সাজতে ফিঙ্গে রাজা’ এটিও রম্যরচনা। প্রয়াত সাহিত্যিক সুচরিত চৌধুরীর মূল্যায়নে ফাহমিদা আমিন বাংলাদেশের একমাত্র লেখিকা। যাঁর রম্যরচনা রসজ্ঞ পাঠক পাঠিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বেগম মুশতারী শফী: ১৯৬৪ সালে মেয়েদের প্রেস থেকে প্রকাশিত হলো বান্ধবী নামের একটি মাসিক পত্রিকা। উমরতুল ফজল, সালেহা জহুর, আইনুন নাহার, ফরিদা আখতার বুলিসহ জনা কয়েক লেখিকা–সাংবাদিককে নিয়ে একটি মানসম্মত পত্রিকা প্রকাশের কঠিন পরীক্ষায় নেমেছিলেন এর সম্পাদক বেগম মুশতারী শফী। এ পরীক্ষায় যে তিনি সফল হয়েছিলেন, ১১ বছর ধরে এই পত্রিকার অব্যাহত প্রকাশই তা প্রমাণ করে। বান্ধবী চট্টগ্রাম ও ঢাকা তো বটেই, কলকাতাতেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। মুশতারী শফী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের নারী’, ‘চিঠি, জাহানারা ইমামকে’ এবং ‘স্বাধীনতা আমার রক্তঝরা দিন’। এছাড়াও তিনি প্রবন্ধ, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী, কিশোর গল্পগ্রন্থ, স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ প্রভৃতি শাখায়ও অবদান রেখেছেন। অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে লেখা ‘আমি সুদূরের পিয়াসী’, স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ, ‘স্মৃতিতে অমলিন যারা’, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ছোটগল্পের সংকলন ‘দুটি নারী ও একটি মুক্তিযুদ্ধ’, ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প’ ও ‘একুশের গল্প’সহ প্রভৃতি।
ফেরদৌস আরা আলীম : ফেরদৌস আরা আলীম একজন কথাসাহিত্যিক, বোদ্ধা প্রাবন্ধিক, গবেষক, কবি ও শিক্ষাবিদ। সবশ্রেণির সাহিত্যমোদির কাছে তিনি জনপ্রিয় এক লেখক। একজন চিন্তক আর স্বপ্নদর্শী লেখক হিসেবে আমরা পাই তাঁর অসাধারণ গল্পগ্রন্থ : হননসুখ। এছাড়া আছে প্রবন্ধের বই : নিমপ্রবন্ধ‘ ‘প্রবন্ধের আলপথে“।
শিরীণ আখতার : অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার একাধারে কথাসাহিত্যিক, কবি ও প্রাবন্ধিক। তিনি হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা উপাচার্য। ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের জন্ম ১৯৫৬ সালে কক্সবাজারের ঈদগাঁতে। ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮১ সালে তিনি একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেন ড. শিরীণ। ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে যেমন উপন্যাস আছে, তেমনি আছে গল্প, প্রবন্ধ–গবেষণা।
আনোয়ারা আলম : বাংলাদেশে নারী–পুরুষের বিশুদ্ধ সাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরন্তর সংগ্রাম করে চলেছেন যে জন গুণী লেখক, তাঁদের মধ্যে ড. আনোয়ারা আলম অন্যতম। তিনি গল্প লেখেন, প্রবন্ধ লেখেন, সমসাময়িক প্রসঙ্গে কলাম লেখেন, লেখেন ছোটোদের জন্যও নানা স্বাদের রচনা। ‘ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের নারী’ গ্রন্থের জন্য জন্য পেয়েছেন ব্যাপক খ্যাতি ও পরিচিতি। এছাড়া আরো কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। এর মধ্যে রয়েছে ‘ভাঙনের শব্দ’, ‘ভিন দেশে ঝরা পালক’, ‘ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম ও শিশু’, ‘আমার শিক্ষকতার জীবন’, ‘বসন্তের বৃষ্টি’, ‘শিশির থেকে শবনম’, ‘নারী ও শিশু পাচার : পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ’, সাতরঙা জীবন প্রভৃতি।
ফরিদা ফরহাদ : বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন এক ব্যক্তিত্ব। লেখালেখি, সমাজসেবা, উপস্থাপনা, সংগঠন পরিচালনা–প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি উজ্জ্বল ও অনন্য। সাহিত্যের নানা শাখায় তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ। গল্প, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনী–সবক্ষেত্রে তিনি স্বতঃস্ফূর্ত। তিনি আমাদের নান্দনিক জীবনবোধের প্রমা ও লাবণ্য ছড়ানো স্বাপ্নিক ব্যক্তিত্ব। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে, ‘জীবনের পংক্তিমালা’, ‘অগ্নি সাক্ষীর নেই প্রয়োজন’, ‘নদী ও নারী–নর ও বন’ ‘স্পর্শ পেলেই’, ‘ ‘স্বপ্নে রাঙ্গা দিনগুলি’, ‘খেলতে পড়তে ছড়া’, ‘ছড়ার দেশে পড়ার দেশে’, ‘নিঃশব্দ যন্ত্রণা’, ‘আমাকে ভালোবাসতে দাও’, ‘সুন্দর’, কবিতায় হাঁটাহাঁটি, বৃষ্টিকন্যা।
এলিজাবেথ আরিফা মুবাশ্শিরা: একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, কলামিস্ট, শিশুসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ। জন্ম ২৯ এপ্রিল ১৯৫০। চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানার উত্তর মাদার্শা গ্রামের ঐতিহ্যবাহী পরিবার পণ্ডিত বাড়িতে। এ পর্যন্ত অনেকগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। তন্মধ্যে কাব্যগ্রন্থ : ‘নক্ষত্রহীন রাতে’, ‘শ্রাবণ দিনের কেয়া’, ‘বকুল ঝরা পথে’; গল্পগ্রন্থ : ‘অনুভব’, ‘বৈশাখের লাল গোলাপ’, ‘ফাল্গুনে একদিন’, ‘যখন ফুটলো ফুল’, ‘হৃদয়ে লেখো নাম’; শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ :‘ফুলপরীর দেশে’, ‘খুদে এক মুক্তিযোদ্ধার গল্প’, ‘গল্প হলেও সত্যি’, ‘স্বাধীনতার জন্য’; এবং উপন্যাস : ‘রৌদ্রদহন’, কলাম : ‘আমার দেশ আমার শহর’।
জিনাত আজম : ভ্রমণকাহিনি ও রম্যরচনার ক্ষেত্রে যিনি অতুলনীয় আমাদের নারী লেখকদের মধ্যে একজনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই, যিনি ভ্রমণে কেবল আনন্দ পান না; ভ্রমণ কাহিনি লিখে পাঠকদেরও আনন্দ দেন; তিনি হলেন জিনাত আজম। জিনাত আজমের ভ্রমণ বিষয়ক অসাধারণ গ্রন্থ ‘অন্তরে বাইরে অনিকেত প্রান্তরে’। নানা দেশ ভ্রমণ করে তিনি দৈনিক আজাদীসহ বিভিন্ন পত্রিকায় তা প্রকাশ করেছেন নিয়মিত। জিনাত আজম একজন বিশিষ্ট রম্যসাহিত্যিক। সমকালীন বিষয় নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক লেখা রচনার ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি নেই। ‘আমি তেলাপোকা বলছি’ তাঁর সাড়া জাগানো গ্রন্থ। সমপ্রতি প্রকাশিত হয়েছে আরেক গ্রন্থ ‘নজর আলীর সাতকাহন’।
তহুরীন সবুর ডালিয়া : প্রচারবিমুখ বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন একজন লেখক তহুরীন সবুর ডালিয়া। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, ফিচার প্রত্যেকটি মাধ্যমে তাঁর বিচরণ স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বচ্ছন্দ। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি করে আসলেও আশির দশকেই তাঁর কণ্ঠস্বর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পারিবারিক উত্তরাধিকারই কবিতা ও কথাশিল্পে তাঁকে একেবারে শুরু থেকেই স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বর দিয়েছে এবং শিল্পনিপুণ বাক্ভঙ্গীর অধিকারী করে তুলেছে। তহুরীন সবুরের প্রকাশিত গ্রন্থ সমূহের মধ্যে ‘আভূমি নত হয়ে আছি’ (কাব্যগ্রন্থ) ‘কহে কথা শব্দ সকল’ (গল্পগ্রন্থ) ‘আমাদের রাজহংস দিনে’ (কাব্যগ্রন্থ), ‘নীল এ্যাকুরিয়াম’ (গল্পগ্রন্থ), ‘দিনটি আজ আমাকে দাও’ (কাব্যগ্রন্থ) ‘ভ্রমণে যত আনন্দ’ (ভ্রমনকাহিনি), ‘নিঃসঙ্গ মাঠের গল্প’ (গল্পগ্রন্থ), ‘ছড়ার সাথে পড়ার সাথে’ (ছড়াগ্রন্থ) উল্লেখযোগ্য।
মর্জিনা আখতার : যার ভিতরে সৃষ্টির ব্যাকুলতা আছে, আছে অন্তর্গত তাগিদ তিনি মর্জিনা আখতার। তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এক লেখক। কবি, ছড়াকার, গল্পকার প্রাবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষাবিদ। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘ভালোবাসা জেগে থাক’ ও ‘অন্তরের বসতবাটি’ আমাদের অন্তরে স্থায়ীভাবে ঠাঁই করে নিয়েছে। এভাবেই ভালোবাসা জেগে থাকে। এছাড়া স্বামী সদ্য প্রয়াত গবেষক –কলামিস্ট সাখাওয়াত হোসেন মজনুর সঙ্গে যৌথভাবে অন্তত ১৮টি গ্রন্থের কাজ করেছেন। অতি সমপ্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ছড়াগ্রন্থ ‘দুরন্ত শৈশব’।
সেলিনা শেলী : প্রজ্ঞা, মেধা ও সৃজনশীলতাই যাঁর প্রধান ভিত্তি, তিনি সেলিনা শেলী। তাঁর এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : কাব্য: ‘অন্ধকার হে অন্তর্গত’, ‘নিভে আসে সূর্য সকাল’, ‘চিতা চৈতন্যের গান’, ‘দ্বিধাসংহিতা’, ‘তাচ্ছিল্যকুসুম’ ছোটগল্প: ‘হনন’, প্রবন্ধ: ‘কতিপয় কবিতার কথা’, ‘সেদিন কী দিন ছিল এ দিন কী দিন’, ‘কবিতার ব্যঞ্জন ও ব্যঞ্জনা’, ‘কবে থেকে ট্রেনে ওঠে বাংলা কবিতা’।
বদরুননেসা সাজু : স্বভাবে লাজুক, কর্মে নির্ভীক ও আত্মবিশ্বাসী বদরুননেসা সাজু একজন নিভৃতচারী লেখক। একাধারে কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, সমালোচক ও গবেষক। তিনি সাহিত্য ও সমাজসেবামূলক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত। এ যাবৎ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘মদিরা’, ‘শব্দহীন রাতের শব্দ’, ‘চিরন্তন পথিকৃৎ’, ‘নিসর্গ আলোর ঠিকানা’, ‘নারী জাগে কর্মযজ্ঞে আনন্দে’, ‘মরমী গান সাধক পুরুষ ও অন্যান্য এবং গল্পগ্রন্থ ‘জেগে ওঠার দিন’।
বিচিত্রা সেন : গল্পে ছবি আঁকার ক্ষেত্রে একজন দক্ষ শিল্পী বিচিত্রা সেন সমকালীন সাহিত্যের এক বিশিষ্ট ও নিষ্ঠাবান কর্মী। সাহিত্যের নানা মাধ্যমে তিনি সক্রিয়। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, গবেষণা, কলাম লিখে ইতোমধ্যে একটা অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এতো সব মাধ্যমে বিচরণ হলেও তাঁর প্রধান চর্চিত মাধ্যম ‘কথাসাহিত্য’। ইতিপূর্বে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গল্প–উপন্যাসের বই। বইগুলো হলো : ‘অন্যরকম গল্প’ ‘নীল খাম’, ‘চোখের আলো’, জলছবি সংসার, পদ্মপাতার জল ও বলাকারা উড়ে যায়। এছাড়া জাগিয়া উঠিল প্রাণ নামে একটি প্রবন্ধগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর।
ফারহানা আনন্দময়ী– জন্মশহর খুলনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবন শেষে বর্তমান বাস চট্টগ্রামে। বই আর গান–কবিতার আঁতুরঘরে তার বেড়ে ওঠা। রবীন্দ্রনাথেই তার হাত–পা মেলা, মুক্তি শব্দেরা মাথায়–মনে ডাক পাঠালে তিনি টেনে নেন লেখার খাতা। কখনো কবিতা, কখনো গদ্য, কখনো বা অনুবাদ। কিছু লেখা চলে যায় পত্রপত্রিকার দপ্তরে। কিছু লেখা থাকে নিজের কাছে সযত্নে। সেইসব লেখা নিয়েই ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে তাঁর কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ। এর মধ্যে আছে ‘মেঘ অরণ্য’, ‘ইচ্ছে সবুজ এবং দীর্ঘায়ু চাইনি, আনন্দায়ু দাও’। তাঁর মৌলিক গল্পের চেয়ে অনুবাদ গল্প বেশি চোখে পড়ে।
মহুয়া ভট্টাচার্য : মহুয়া ভট্টাচার্য একজন কথাসাহিত্যিক, কবি ও প্রাবন্ধিক। সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তিনি সক্রিয়। তিনি যেমন সাহসী, তেমনি দক্ষ। তাঁর লেখাগুলো পাঠক সমাজে বেশ আলোড়ন তোলে। ‘পুনরাবৃত্ত‘ তাঁর অনবদ্য গ্রন্থ।
ইসমত আরা জুলী : জন্ম চট্টগ্রামের কাট্টলীতে। যদিও এখন অবস্থান করেন রাজধানীতে। কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, অনুবাদ সাহিত্য ও শিশুসাহিত্য। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: ‘হতে চাইনি ডক্টর ফস্টাস’, ‘এ শহর আমার নয়’, ‘নাফ নদীর রক্তগ্রোতে’ এবং অনুবাদ–গ্রন্থ ‘ও হেনরির ডেলা, ডিলিংহ্যাম এবং অন্যান্য’।
রুনা তাসমিনা : নানামুখী রচনায় রয়েছে রুনা তাসমিনার সমান আগ্রহ ও কৌতূহল। কখনো ছড়া, কখনো কবিতা, কখনো ফিচার, কখনো প্রবন্ধ–নিবন্ধ লিখলেও গল্প লেখায় তিনি বেশ স্বতঃস্ফূর্ত। ছোটো এবং বড় উভয়ের জন্য তিনি লেখালেখি করেন সনিষ্ঠ আন্তরিকতায়। দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর লেখা গল্প অত্যন্ত মর্যাদার সঙ্গে প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘মেঘে ঢাকা চাঁদ’ ‘টিয়া হাসে নীল আকাশে’, ‘সূর্য নাচে রং তুলিতে‘, ‘দীপুর লাল ঘুড়ি’, ‘প্রাণের নেতা বঙ্গবন্ধু’, ‘সুবাসিত নক্ষত্ররাত‘ ‘গাছ–পাখি রোদের হাসি’, নাম ছিল তার রাসেল প্রভৃতি পাঠকমহলে সাড়া জাগিয়েছে।
দীনা মরিয়ম : দীনা মরিয়ম চট্টগ্রামের কথাসাহিত্যে সুপরিচিত এক নাম। কবিতা ছড়া লিখলেও কথাসাহিত্যই তাঁর মূল চর্চিত মাধ্যম। তিনি বিশিষ্ট তাঁর ‘নিজস্ব সৃজনসম্ভার এবং লিখনকুশলতায়’। দীনা মরিয়মের লেখা প্রকাশিত হয়েছে বড়দের গল্পের বই : ‘আকাশ নিল মেঘের সাজ’, ‘তটে আঁকা ছবি’ ও ‘রূপালি পাতের ঝিলিক’ এবং উপন্যাস : ‘তোমায় নতুন করে পাবো বলে’। তাঁর গল্পে উঠে এসেছে ‘মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক, সম্পর্কের বিচিত্র অম্লমধুর ভালোবাসা–প্রতারণা–হিংসা–দ্বন্দ্ব–ঘাত এবং অভিঘাত’। ছোটোদের জন্য রচিত তাঁর তিনটি গল্পগ্রন্থ। সেগুলো হলো : ‘ওর সাথী প্রজাপতি’, ‘যে গল্পের হয় না শেষ’, ‘নানজীবা ও তার সাথীরা’।
কামরুন ঋজু– কামরুন ঋজু চট্টগ্রামের সাহিত্যাঙ্গনে পরিচিত মুখ। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ও ছোটোদের জন্য ছড়া লেখেন নিয়মিত। তিনি তাঁর লেখায় সবসময় সত্যকে তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। কামরুন ঋজুর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় আশির দশকে ‘দৈনিক আজাদী’তে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ম্যাগাজিনে তার লেখা গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। মামার বাড়ি মজা ভারি তাঁর অনন্যগ্রন্থ।
মহুয়া চৌধুরী : কবিতা গল্প প্রবন্ধ প্রত্যেকটি মাধ্যমে তাঁর বিচরণ। ঋজু, সাবলীল ও স্বতঃস্ফূর্ত গতিময়। স্কুল জীবনেই দৈনিক আজাদীর আগামীদের আসরে তার লিখালিখির সূচনা। ছড়া ও ছোট গল্প দিয়েই লিখার শুরু। মহুয়া চৌধুরীর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ: ‘কথারা মেলেছে ডানা’ (কাব্যগ্রন্থ) ‘প্রবাসে শিকড়ের গল্প’ (গল্পগ্রন্থ), ‘ধূসর বিকেলের পদাবলী’ (কাব্যগ্রন্থ)।
ফারজানা রহমান শিমু : গুনী একজন লেখক। নিভৃতচারী এই নারী লেখক সময়ের বিচারে অনেককে ছাড়িয়ে গেছেন। আশির দশকে লেখালেখির পথচলা শুরু যখন মাত্র চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। লেখালেখিতে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। তিনি গল্পকার। তিনি অনুবাদক। কবি ও শিশুসাহিত্যিক। শিমুর গল্পের প্রতিচ্ছবিতে ফুটে ওঠা জীবন যে বেঁচে থাকার সার্থক প্রেরণা– সেটাই আজ প্রমাণিত সত্য; গল্পকারের নিরেট লেখনীর সাথে মানবিক সহযোগিতার দারুণ এক যোজনা। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত অনুবাদকর্মসহ প্রায় অর্ধশত গ্রন্থ বেরিয়েছে শিমুর। গল্পগ্রন্থ হলো-‘লাল সাদা নীল’।
জেবারুত সাফিনা– ‘উপলব্ধির অন্তরালে নীরবে নিভৃতে’ জেবারুত সাফিনা। খুব ছোটবেলা থেকেই ছিল ছড়া, কবিতা লেখার প্রতি তাঁর আগ্রহ। পরে যুক্ত হন সমাজসেবা ও লেখালেখিতে। লিখেন কবিতা, প্রবন্ধ ও ছোটগল্প। প্রকাশিত হয়েছে তাঁর তিনটি গ্রন্থ। ‘উপলব্ধির অন্তরালে নীরবে নিভৃতে’, ‘ডানপিটে রোদ’, ‘ভিন গ্রহে ভালোবাসা’।
কামরুন নাহার ঝর্না– নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। শিশুকাল থেকেই চট্টগ্রাম শহরে বড় হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। কবিতা, ছোট গল্প, অনু গল্প, ভ্রমণ কাহিনি লিখেন নিজের খেয়ালে।
সৈয়দা সেলিমা আক্তার : একজন একনিষ্ঠ ছড়াকার, কবি এবং গল্পকার। বেরিয়েছে সেলিমার গ্রন্থ –ছোটদের গল্পগ্রন্থ ‘ভিকি, পিংকি এবং টুনটুনি পাখির গল্প’, ‘বালিকার চোখে উদাসী মেঘ’, ‘যুগলবন্দি ছড়া’ ‘নাশরাহর জন্য ছড়া’, কাব্য গ্রন্থ ‘মনের সাথে যাই হারিয়ে’, ‘জাগতে আমি ভালোবাসি’, ‘মিঠে কড়া ছড়ার ঘড়া’, ‘বিষ্টি যখন পড়ে’, ‘মাগো তুমি’, ও ‘আয়রে খুকু’।
শিরিন আফরোজ: নিসর্গ ইতিহাস আর ঐতিহ্যের প্রতিও যাঁর রয়েছে সুগভীর অনুরাগ শিরিন আফরোজ। চট্টগ্রামের সাহিত্যাঙ্গনে এক পরিচিত মুখ। আমাদের চারপাশের জগৎ, জীবন, প্রকৃতি, প্রেম অবলীলায় উঠে আসে তাঁর গল্পে অনিবার্য অনুষঙ্গ হয়ে। শুধু নিসর্গ নয়, বাংলাদেশের আবহমান ইতিহাস আর ঐতিহ্যের যে গৌরবগাথা, তার প্রতিও তাঁর রয়েছে সুগভীর অনুরাগ। তার প্রকাশিত বই : খুঁজি জীবনের সুখ, রৌদ্রছায়া ও বঙ্গবন্ধু তুমি বাংলাদেশের প্রাণ।
সুলতানা নুরজাহান রোজী : সুন্দরের কারিগর সুলতানা নুরজাহান রোজী। নানা দিকে তাঁর পদচারণা। নারী শিল্প উদ্যোক্তা হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন বহু বছর ধরে, নিরলসভাবে পরিশ্রম ও সততার সঙ্গে। সুলতানা নুরজাহান রোজীর বেশ কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলো হলো : ‘পথের পরে’, ‘সমুদ্রের নোনা জল’, ‘অসুস্থ পৃথিবী’, ‘সুরঞ্জনা একটি গল্পের নাম’, ‘পাণ্ডলিপি আয়োজন’।
রেহেনা মাহমুদ : রেহেনা মাহমুদ।একজন সাহিত্যযোদ্ধা। গদ্য ও পদ্য– দুদিকে তাঁর সমান হাত। চমৎকার কবিতা লেখেন। প্রকাশিত হয়েছে কবিতার দুটি বই। প্রথম গ্রন্থ ‘এবং হিমু মন’, প্রকাশিত হয়েছে অনন্যা থেকে; দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘মনযতিপুর’ প্রকাশিত হয়েছে বেহুলা বাংলা থেকে। ‘শৈলী প্রকাশন’ থেকে বের হলো তার গল্পের বই ‘দৃশ্যান্তরের গল্প‘। । তার কবিতা যেমন পাঠকের মনকে আলোড়িত করে; শব্দ –ভাষা আর অন্তর্গত অর্থগৌরবের মাধ্যমে পাঠককে নতুন করে ভাবায়; তেমনি গল্পও সুন্দর।
ফারহানা তেহসীন : একজন প্রতিভাদীপ্ত গল্পকার। বেশ কয়েকটি বই বের হয়েছে তাঁর। তন্মধ্যে মধ্য নিশীথের নীল, কাঞ্চনজঙ্ঘার দেশে উল্লেখযোগ্য।
মোহছেনা ঝর্ণা: মোহছেনা ঝর্ণা আরেক প্রতিভা। গল্প ও ফিচার লিখে তিনি পাঠকমহলে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছেন। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে নৈঃশব্দ্যের ভেতর, ইলিনের বাবার চশমা।
লিপি বড়ুয়া : লিপি বড়ুয়া কবি ও গল্পকার। প্রবন্ধও লিখে থাকেন পত্র–পত্রিকাগুলোতে। ইতোপূর্বে প্রকাশিত হয়েছে কবিতার বই : মন জোনাকির ছায়াপথ, আমার দিগন্তজুড়ে তোমার সীমানা; বড়দের গল্পগ্রন্থ : তোমার বসন্ত দিনে এবং ছোটােদের গল্পগ্রন্থ : আলোর পাখি শেখ রাসেল।
বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক রাশেদ রউফ রচিত প্রথম অনলাইন বাংলা বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত ‘লেখক সারথি’ গ্রন্থে চট্টগ্রামের আরো কিছু নবীন প্রবীণ তরুণ নারী গল্পকার ঔপন্যাসিকের সন্ধান পাওয়া যায়। যারা –৯০’র দশক পেরিয়ে এখনো তাদের সৃজনশীল কথাসাহিত্য উপহার দিয়ে চলেছেন পাঠক মহলকে।
পুনশ্চ : ‘গল্প উপন্যাসে চট্টগ্রামের নারী’ শিরোনামের এই লেখায় সব নারী গল্পকার ঔপন্যাসিক এর নাম সংযোজন হয়েছে এর দাবি করাটা সমীচীন হবে না। উল্লিখিত নামগুলোর বাইরে নবীন প্রবীণ আরো কিছু নাম অনুল্লেখিত থাকাটাই স্বাভাবিক। অনিচ্ছাকৃত সেই ভুলের দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরো সংবেদনশীল হবার প্রত্যাশা রাখছি। (সূত্র: ‘চট্টগ্রামের নারী লেখক’– শরীফা বুলবুল ও জামাল উদ্দিন সম্পাদিত)
লেখক : প্রাবন্ধিক, সাংস্কৃতিক সংগঠক, আয়কর পেশাজীবী, চট্টগ্রাম।