গলায় ছুরি চালিয়ে স্ত্রীকে খুন, স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

নগরীর হালিশহরের এ ব্লক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকায় গলায় ছুরি চালিয়ে স্ত্রীকে খুনের দায়ে মো. জামিন নামে এক ব্যক্তিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মো. জামিন কিশোরগঞ্জের করপাশ এলাকার শাহ আমিনের ছেলে। রায়ে খুনে সহায়তাকারী হিসেবে মো. মোস্তফা নামের অপর এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মো. মোস্তফা কিশোরগঞ্জের নিকলী এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে। গতকাল চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আবদুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

মোট ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বিচারক চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেছেন জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজাদ আজাদীকে বলেন, এ ঘটনার ভিকটিম রাবেয়া খাতুন। তাকে খুনের অভিযোগে তার পিতা একটি মামলা করেছিলেন। মামলার একমাত্র আসামি ছিল মো. জামিন তথা রাবেয়ার স্বামী। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত মো. মোস্তফা চার্জশিটভুক্ত আসামি। এজহারে তার নাম ছিল না। তদন্তে তার সম্পৃক্ততা মিলেছে।

তিনি বলেন, আসামি জামিনের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে স্ত্রী রাবেয়ার সাথে তার বিরোধ ছিল। এ কারণে পরিকল্পনা করে রাবেয়াকে খুন করেন জামিন। জামিনকে এ কাজে সহায়তা করেন মোস্তফা। মোস্তাফা ভিকটিম রাবেয়ার বোনের স্বামী।

আদালতসূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ১৪ জানুয়ারি গলায় ছুরি চালিয়ে গৃহবধূ রাবেয়াকে খুন করা হয়। এ ঘটনায় রাবেয়ার বাবা আব্দুল মালেক রাবেয়ার স্বামী মো. জামিনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারে বলা হয়, ২০২২ সালে রাবেয়ার সাথে জামিনের বিয়ে হয়। এটি রাবেয়ার দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। প্রথম সংসারে তার দুটি কন্যা সন্তান ছিল। বিয়ের পর থেকেই রাবেয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে জামিন। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে একাধিক বৈঠক হয়। কিন্তু জামিনের অত্যাচার বন্ধ হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি এনজিও থেকে টাকা নেওয়ার জন্য স্বাক্ষর দিতে বললে রাবেয়া তাতে রাজি হননি। এতে জামিন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। পরে একই বছরের ১৪ জানুয়ারি গলায় ছুরি চালিয়ে রাবেয়াকে খুন করা হয়।

এ মামলা তদন্ত করে পুলিশ। তদন্ত শেষে একই বছরের ২৪ মে রাবেয়ার স্বামী জামিন ও তার সহযোগী মোস্তফার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরই ধারাবাহিকতায় একই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বন্দরসহ পাঁচ প্রতিষ্ঠানে এনআইডির তথ্য ফাঁস
পরবর্তী নিবন্ধসঞ্চয়ের আড়াই লাখ টাকা ও দেড় ভরি স্বর্ণ পুড়ে ছাই, নিঃস্ব ওরা