দেশের চাহিদা পূরণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা গড়ে তুলতে সরকার গম আমদানি শুরু করছে। আগামীকাল রোববার প্রথম দফায় ৫০ হাজার টন গম আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। এটিই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে প্রথম গম আমদানির টেন্ডার। এই টেন্ডারে প্রাপ্ত দর যাচাই বাছাই করে সরকার খোলাবাজারের পাশাপাশি জিটুজি চুক্তির আওতায়ও গম কিনবে। আগামী অর্থবছরে সরকার অন্তত ১০ লাখ টন গম আমদানি করবে বলে উল্লেখ করে সূত্র বলেছে, আগামী অর্থবছরে বেসরকারি খাতে অন্তত ৭০ লাখ টন গম আমদানি হবে। বিশ্ববাজারে গমের প্রচুর মজুদ থাকায় দর এখন নিম্নমুখী। বেসরকারি আমদানিকারকরাও গম আমদানির পরিমাণ বাড়াচ্ছেন।
সূত্রে জানা যায়, দেশে গমের বিপুল চাহিদা রয়েছে। আটা ও ময়দা নির্ভর খাবারের কদর বাড়ার সাথে সাথে গমের চাহিদাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বর্তমানে দেশে বছরে গড়ে ৮০ লাখ টনের বেশি গমের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ১১ লাখ টন গম দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি গম আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। বাংলাদেশ তার চাহিদার অর্ধেকের বেশি গম আমদানি করে রাশিয়া থেকে। চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ প্রায় ৫৪ শতাংশ। এরপর রয়েছে ইউক্রেন। চলতি অর্থবছরে ইউক্রেন থেকে গম আমদানির পরিমাণ ১৪ শতাংশ। এছাড়া ব্রাজিল, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও উরুগুয়ে থেকে বাংলাদেশের আমদানিকারকগণ গম কিনেন।
সরকারিভাবে আমদানিকৃত গমের অধিকাংশই আসে রাশিয়া থেকে। এছাড়া ইউক্রেন, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও উরুগুয়ে থেকেও সরকার গম আমদানি করেছে।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাল আমদানি করলেও গত প্রায় এক বছরে কোনো গম আমদানি করেনি। এই প্রথম গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামীকাল ২২ জুন প্রথম দফায় ৫০ হাজার টন গম আমদানির আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে সরকার অন্তত ১০ লাখ টন গম আমদানি করবে জানিয়ে সূত্র বলেছে, প্রথম টেন্ডারে প্রাপ্ত দর যাচাই বাছাই করে সরকার পরবর্তী গম আমদানির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। সরকার জিটুজি (সরকারের সাথে সরকারের) চুক্তির মাধ্যমে গম আমদানি করবে। খাদ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা গতকাল আজাদীকে বলেন, দেশে খাদ্যের প্রচুর মজুদ রয়েছে। গমেরও অভাব নেই। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও গমের প্রচুর মজুদ রয়েছে। তবুও খাদ্য নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সরকার গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্ববাজারে গমের বাজারদর বর্তমানে নিম্নমুখী। বর্তমানে জাহাজে চট্টগ্রামে পৌঁছানো পর্যন্ত ২২৭ থেকে ২৪০ ডলারের মধ্যে গম কেনা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় গমের প্রচুর মজুদ রয়েছে। কানাডায়ও ফলন ভালো হয়েছে। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ চললেও দেশ দুটি থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা হবে না।