গণভোটে যারা হ্যাঁ’র পক্ষে থাকবে তারা অতীতের বস্তাপচা রাজনীতি চায় না

চট্টগ্রামের নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে জামায়াতের আমির

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ at ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ

আগামীর গণভোটে যারা হ্যাঁএর পক্ষে থাকবে তারা অতীতের বস্তাপচা রাজনীতি চায় না এবং যারা নাএর পক্ষ অবলম্বন করবে তারা অতীতের বস্তাপচা রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে চায় বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নগরের জিইসি কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রামের নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন নগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমার ভোট আমি দিব তোমার ভোটও আমি দেবএই নীতি আর চলবে না। এবার যার ভোট সে দিবে, যাকে খুশি তাকে দিবে। আমাদের লড়াই হবে মাজলুমের পক্ষে, জালিমের বিপক্ষে। আমরা আর কাউকে জালিম হয়ে উঠতে দিব না।

তিনি বলেন, গত তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। অনেক তরুণ তাদের জীবনে একটি বারও ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। তারা অপেক্ষা করছে ভোট দিতে। কেউ তাদের অধিকার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আপনাদের পরিণতিও ভালো হবে না। অতীত থেকে সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে।

জামায়াতের আমির বলেন, আজকে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মুখে দাঁড়িপাল্লার জোয়ার উঠেছে। অথচ দীর্ঘ সময় বাংলার জনগণ থেকে দাঁড়িপাল্লা কেড়ে নেয়া হয়েছিল। পরিবর্তিত বাংলাদেশে দাঁড়িপাল্লা গণমানুষের আস্থার প্রতীক হিসেবে উপনীত হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় ধরে জুলুম সহ্য করেছি আল্লাহর জন্য। পট পরিবর্তনের পর আমরা কারো উপর জুলুম হতে দিইনি। দেশবাসীকে বলেছি ধৈর্য ধরতে। তারা ধৈর্যের সর্বোচ্চ উদাহরণ তৈরি করেছেন। প্রশাসন ভয় পেত। আমরা তাদের সাহায্য করেছি। উৎসাহ দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়তে চাই। আমরা অতীতেও চাঁদাবাজি করি নাই, আগামীতেও করব না ইনশাআল্লাহ। আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই। আমাদের অনেক রাজনৈতিক দল এই কথাটি জোরালোভাবে বলতেও পারে না। কারণ বলতে গেলে তাদেরও হাসি আসবে, জনগণও হাসবে।

শফিকুর রহমান বলেন, আমরা ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ কায়েম করতে চাই। আমরা অনেক জুলুম সহ্য করেছি। আর কোনো মানুষ যেন জুলুমের শিকার না হয়। আমরা জুলুমমুক্ত ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে চাই। আজকে সকল ইসলামপন্থী ও দেশপ্রেমিক মানুষ ঐক্যবদ্ধ। তাদের নিয়ে আমরা যদি দেশ পরিচালনার সুযোগ পাই, তাহলে আমাদের কোনো এমপিমন্ত্রী সরকারি কোনো বাড়ি গ্রহণ করবেন না, টেক্সবিহীন গাড়ি গ্রহণ করবেন না। আমাদের জনপ্রতিনিধিরা বিলাসী জীবনযাপন করতে পারে না। বিলাসিতা আল্লাহ পছন্দ করেন না। আমরা আল্লাহর নির্দেশনার আলোকে ন্যায়ভিত্তিক দেশ পরিচালনা করব ইনশাআল্লাহ।

বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর থেকে বাংলার জনগণ এমন এক দেশ দেখতে চায় যেখানে কোনো স্বৈরাচারীর জন্ম হবে না, ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে না। মানুষ এমন দেশ চায় যেখানে পরিচালকেরা দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করবে না। এসব উদাহরণ তৈরি করেছেন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ। তাদের উত্তরসুরিদের আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি। আপনাদের তাদেরকে বিজয় আসনে বসাতে হবে। আমিরে জামায়াতের নির্দেশনা নিয়ে সকলকে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যেন তাদের বিজয় নিশ্চিত করা যায়। তিনি বলেন, এই শহীদের দেশে আর কোনো দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজকে দেশের পরিচালনায় স্থান দেয়া যাবে না।

নগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও দখলবাজের প্রত্যাখান করবে। ন্যায় ও ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাকে বিজয়ী করবে। বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসাবে গড়ে তুলবে ইনশাআল্লাহ।

চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক, উত্তর জেলা সেক্রেটারি আব্দুল জব্বার, কক্সবাজার জেলা সেক্রেটারি জাহিদুর ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগরীর অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১০ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শামসুজ্জামান হেলালীর যৌথ সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ, চট্টগ্রাম১৫ (সাতকানিয়ালোহাগাড়া) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ জাফর সাদেক, মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যক্ষ মাওলানা আমিরুজ্জামান, অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আমির আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, উত্তর জেলা আমির ও চট্টগ্রাম৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী আলাউদ্দিন সিকদার, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা আমির অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল মোমেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা আমির মাওলানা আবদুস সালাম আজাদ, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল আলিম, কক্সবাজার জেলা নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগরীর অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি এস এম লুৎফুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মুহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল ও চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাঈমুনুল ইসলাম মামুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬