খেলোয়াড়দের রাজনীতি করার ব্যাপারে নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা জরুরি : প্রধান নির্বাচক

স্পোর্টস ডেস্ক | মঙ্গলবার , ১৩ আগস্ট, ২০২৪ at ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ

পেশাদার ক্রিকেটাররা খেলোয়াড়ি জীবন শেষে রাজনীতিতে জড়িয়েছেন, এমন উদাহরণ অহরহ আছে। তবে জাতীয় দলে খেলার পাশাপাশি সংসদ সদস্য হয়েছেন এমন ক্রিকেটার কিংবা রাজনীতিবিদের সংখ্যা বিরলই। সেই তালিকারই একজন সাকিব আল হাসান। সেদিকে তাকিয়েই খেলোয়াড়ি জীবনে কারও রাজনীতিতে যোগ দেওয়া উচিত নয় মনে করেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ লিপু; একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোরও কোনো খেলোয়াড়কে দলে নেওয়া সমীচীন নয় বললেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় রাজনীতি ও খেলাধুলার নীতির বিষয়ে সংস্কারের দাবি তুলেছেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক ও সাবেক অধিনায়কের মতে, খেলোয়াড়ি জীবনে রাজনীতি করার ব্যাপারে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা উচিত। বাংলাদেশের রাজনীতিতে খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ চলছে অনেক দিন ধরে। একাদশ সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। গতবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে তার সঙ্গী হন তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এর পক্ষেবিপক্ষে অনেকেই করেছেন নানা মন্তব্য। সরকার পতনের পর সংসদ ভেঙে দেওয়ায় দুজনই এখন সাবেক সংসদ সদস্য। দেশের সামপ্রতিক পরিস্থিতিতে তারা আছেন তোপের মুখে। সতীর্থ ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহান রোববার সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেছেন, ক্রিকেটার থাকা অবস্থায় কেউ যেন রাজনীতি না করে। পরদিন সংবাদ সম্মেলনে একই কথা বললেন গাজী আশরাফ। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকেও দায় দিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক। ‘এখন যে সংস্কারের ছোঁয়া লেগেছে, আমার বিশ্বাস নিশ্চয়ই এমন কিছু প্রক্রিয়া ঠিক করা হবে যে, কেউ জাতীয় দলে থাকা অবস্থায় রাজনীতি করতে পারবে কিনা। এই কথাটা কালকে হয়তো সোহান (নুরুল হাসান) বলেছেন। একইসঙ্গে আমি একটা বার্তা দিতে চাই, সংস্কার দুই জায়গায়ই হতে হবে। একজন খেলোয়াড় রাজনীতিতে যোগদান করতে পারবেন কিনা, সেটা ঠিক করা দরকার। এর পাশাপাশি একটা রাজনৈতিক দলেরও কি উচিত, কোনো জাতীয় দলের খেলোয়াড়কে রাজনীতি করার জন্য দলে টেনে নেওয়া? তারা তো জনগণের জন্যই কাজ করে। দেশের কথাই ভাবে। তাই বিষয়টা একপাক্ষিক নয়। তাই শুধু খেলোয়াড়কে দোষ দিলেই হবে না। রাজনৈতিক দলকেও সমান দায় দিতে হবে।’ এসময় খেলোয়াড়দের রাজনীতি করার ব্যাপারে নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা তৈরির দাবি জানান গাজী আশরাফ। ‘আমি মনে করি, এটা আসলে সংশ্লিষ্ট ফেডারেশন বা বোর্ড থেকে নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা আসা উচিত। যদি খেলা থাকে এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ড থাকে, তাহলে আপনি কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন? এটা একটা ইস্যু হয়ে যায়। তাই যদি একটা দিকনির্দেশনা থাকে, তাহলে মনে হয় ভালো হবে। তাহলে কোন খেলোয়াড় রাজনীতিতে যাওয়ার আগে চিন্তা করবেন তার অগ্রাধিকার কোথায়? এই রাস্তাটা মনে হয় বন্ধ হওয়া উচিত।’ জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচকের মতে, একজন ক্রিকেটার বা ক্রীড়াবিদের নিজের নৈতিকতার জায়গা থেকেও খেলোয়াড়ি জীবনে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া উচিত নয়। ‘আপনি একজন জাতীয় সম্পদ হলে আপনাকে সে পর্যায়ে নেওয়ার জন্য অনেক বিনিয়োগ থাকে। তারপর খেলোয়াড় হিসেবে আপনার দেশকে যখন আরও অনেক কিছু দেওয়ার থাকে, তখন আপনি যদি হুট করেই কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেনহ্যাঁ আপনি যদি আগে থেকে রাজনীতির ব্যাপারটা সাজিয়ে নেন, সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু আপনি যদি হঠাৎ আপনার বর্তমান অবস্থানের কারণে রাজনীতিতে চলে যান, সেটা হলে দেশই বঞ্চিত হয়। আমার কথা হলো, রাজনৈতিক দলের ভাবনার বিষয় আছে যে, একটা খেলোয়াড় যখন তার জায়গায় ভালো করছে, তাকে নেওয়া উচিত কিনা। খেলোয়াড়েরও প্রায়োরিটির সুযোগ আছে। মানুষ ভুল করে। তার শুধরানোর সুযোগও আছে। আমি মনে করি, সাকিব বা অন্য যে কোনো খেলোয়াড়ই হোক তিনি যদি তার পথচলায় কোন ভুল করে থাকেন, নিজেরই বোঝার সুযোগ হবে তিনি কোথায় ভুল করেছেন এবং নিজেকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে আসতে পারবেন।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাকিবকে মেধার ভিত্তিতে দলে নেওয়া হয়েছে
পরবর্তী নিবন্ধট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে হুমায়রা ঈশিকা