ঈদের ছুটি শেষে গতকাল থেকে খুলেছে অফিস আদালত। এবার ঈদে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা ক্ষেত্র বিশেষে ৫–৬ দিনের ছুটি ভোগ করেছে। ছুটি শেষে কর্মযজ্ঞ শুরু হলেও এখনো অফিস পাড়ায় ছুটির রেশ কাটেনি। বেশিরভাগ মানুষকে অফিসে ঈদের কুশল বিনময় ও খোশগল্প করে সময় কাটাতে দেখা যায়।
এছাড়া ছিল না সেবাগ্রহীতাদের চাপ। অপরদিকে নগরীর অনেক দোকানপাট, হোটেল–রেস্তোঁরা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও খুলেনি। ফলে সড়কে ছিল না যানবাহনের চাপ। তাই নগরীর বেশিরভাগ সড়ক ও উপসড়ক ছিল অনেকটাই ফাঁকা। নগরীর বিভিন্ন ব্যস্ততম মোড়ে রিকশা চালকদের যাত্রীর অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। রিকশা চালক হোসেন মিয়া বলেন, ঈদের প্রথম দুইদিন কিছুটা আয় হয়েছিল। এরপর থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে তেমন ভাড়া পাচ্ছি না। আসলে প্রতি বছর ঈদের প্রথম সপ্তাহ এরকমই হয়। মানুষজন গ্রাম থেকে আসতে আসতে সপ্তাহখানেক লেগে যায়।
অন্যদিকে নগরীর ব্যাংকপাড়া খ্যাত আগ্রাবাদের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ছিল না গ্রাহকের চাপ। অনেক কর্মকর্তাকে অলস সময় পার করতে দেখা যায়। এছাড়া খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম কার্যালয়, আদালত ভবন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, শিপিং কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ সরকারি বেসরকারি প্রায় সব অফিসে কার্যক্রম চলেছে ঢিমেতালে। অপরদিকে ঈদের ছুটি শেষে অনেক মার্কেট–শপিংমল খুললেও সেখানে ছিল না ক্রেতাদের পদচারণা। একপ্রকার নিয়ম রক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠান খুলেছে বলে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারী বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জে দেখা মেলেনি ট্রাক–কাভার্ড ভ্যানের দীর্ঘ সারি। এছাড়ার্ ছিল না চিরচেনা শ্রমিকদের হাঁকডাক। এখনো অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খুলেনি। যারা খুলেছেন তাদের অধিকাশই ব্যাংকিং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান খুলেছে বলে জানা গেছে। চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ঈদের ছুটি মাত্র শেষ হলো। এখনো চাক্তাই খাতুনগঞ্জে অনেক শ্রমিক–কর্মচারী গ্রাম থেকে কাজে যোগ দেয়নি। এখন যারা দোকানপাট খুলেছে তারা ব্যবসায়িক লেনদেনের স্বার্থে প্রতিষ্ঠান খুলেছে। চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আগের মতো প্রাণচঞ্চল হতে আরো সপ্তাহখানেক মতো সময় লাগতে পারে।
অপরদিকে নগরীর অনেক হোটেল–রেস্তোঁরা এখনো চালু হয়নি। যেসব চালু হয়েছে সেখানে নেই আগের মতো ভিড়। এছাড়া দূর পাল্লার বাস স্টেশনগুলোতে রয়েছে যাত্রী সংকট। যাত্রী সংকটের কারণে বাস চালক–হেল্পাররা পরস্পর আড্ডা দিয়ে সময় পার করছেন। কদমতলী বাস স্টেশনে কথা হয় চালক আমির হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, মাত্র ঈদ শেষ হয়েছে। এখন থেকে গ্রাম থেকে চট্টগ্রামমুখী যাত্রীর চাপ থাকবে। তবে এখনো সেই চাপ শুরু হয়নি। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রী নেই বললেই চলে।