রাঙ্গুনিয়ায় অজ্ঞাতনামা এক যুবককে গলা কেটে হত্যা করে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাশটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার সেলিমা কাদের চৌধুরী কলেজ গেইট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ ও স্থানীয়রা।
নিহত যুবকের আনুমানিক বয়স ৩৫ বছর। তার পরনে একটি টি–শার্ট এবং নিচের অংশে ট্রাউজার ছিল। এ ছাড়া লাশের গলার দিকে গভীর কাটার ন্যায় ক্ষত চিহ্ন রয়েছে এবং রক্তের ছোপ পেট ও মুখেও ছড়িয়েছে। কেউ তাকে গলাকেটে খুন করে ওই স্থানে ফেলে রেখে গেছে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন। আবার সড়ক দুর্ঘটনায়ও তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ। তবে অনেকটা নির্জন এই স্থানে দুটি গাড়ির মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটেছে এমন কোন চিহ্নও পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ বলছে হত্যাকাণ্ড নাকি সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত শেষে বলা যাবে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল চট্টগ্রাম শহরগামী একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক লাশটি ওই স্থান থেকে কয়েকজন পথচারীদের অনুরোধে চুয়েট গেইটে নিয়ে যান অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার আশায়। পরে রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির ও রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন।
এই ব্যাপারে লাশটিকে বহনকারী সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. নাছিরের সাথে কথা হয়। এই অটোচালকের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়া। চট্টগ্রামের রাস্তারমাথা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি জানান, ভাড়া নিয়ে রাঙ্গুনিয়া থেকে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। গাড়িতে অন্য একজন যাত্রী ছিল। যাওয়ার পথে সেলিমা কাদের কলেজ গেইট এলাকায় কয়েকজন পথচারী রক্তাক্ত ওই ব্যক্তিকে দেখতে পেয়ে তাকে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেন। তারা লোকটি বেঁচে আছেন ভেবে চুয়েটের হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত নিতেই গাড়িতে উঠিয়ে দেন। চুয়েট গেইটে গিয়ে বুঝতে পারেন লোকটি মারা গেছে। পরে স্থানীয়দের সাহায্যে পুলিশ খবর পেলে তারা এসে লাশটি উদ্ধার করেন বলে তিনি জানান।
প্রত্যক্ষদশী নুরুল কবির জানান, নিহত ব্যক্তি রক্তাক্ত। তার গলায় ছুরিকাঘাত বা লোহার রডের ফুটো রয়েছে। এটা কোন সড়ক দুঘটনা নয়, এটা পরিকল্পিত হত্যকাণ্ড হতে পারে দাবি করে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে দুটি গাড়ির সংঘর্ষেও কোন চিহ্ন নেই, তাছাড়া নিহত যুবক পথচারী হলে সে এই এলাকার কেউ না কেউ চিনত। আর তিনি একা কেন নির্জন এই স্থানে অবস্থান করবে তাও বলা যাচ্ছেনা।
এই ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি গাড়ির হুইপার পাওয়া গেছে। তবে এটি হত্যাকাণ্ড নাকি সড়ক দুর্ঘটনা তা তদন্ত শেষে বলা যাবে। লাশ ময়না তদন্ত করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। আত্মীয় স্বজনদের খুঁজে বের করে তদন্ত ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হবে।