খাগড়াছড়িতে এক কিশোরী গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার জেলা সদরের খাগড়াপুর এলাকায় স্থানীয় ঠিকাদার অনন্ত ত্রিপুরার বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ঐ কিশোরীর নাম মৌমিতা ত্রিপুরা (১২)। তার বাড়ি উপজেলার নুনছড়ি এলাকার থলিপাড়া গ্রামে।
প্রায় ৭ মাস আগে খাগড়াপুর এলাকার বাসিন্দা ঠিকাদার অনন্ত ত্রিপুরার বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেয় ঐ কিশোরী।
ঘটনার দিন বাড়িতে কেউ ছিল না বলে জানান অনন্ত ত্রিপুরা।
আজ শনিবার (১৪ নভেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে কিশোরীটির অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করে কিশোরীর পরিবার।
তবে বিষয়টি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মাত্র ১২ বছর বয়সের কিশোরীর আত্মহত্যার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ইতোমধ্যে এই ঘটনায় খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনায় কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ।
নিহত কিশোরীর বাড়ির মালিক অনন্ত ত্রিপুরা বলেন, “ঘটনার দিন আমি রাঙামাটিতে ছিলাম। এ সময় বাসায় কেউ ছিল না । পরে বাসায় লক ভেঙে মৌমিতা ত্রিপুরার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কেন সে আত্মহত্যা করেছে তার সঠিক কারণ জানি না।”
ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ উদ্ধার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে সংরক্ষিত ছবিতে দেখা যায়, কিশোরী মৌমিতা বিছানার উপর ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলছে। এতো উপরে ফ্যানের সাথে কিশোরীটি কীভাবে ঝুলল তা নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে। ঘটনার পর পুলিশকে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।”
দেশে শিশুশ্রম বন্ধ থাকার পরও কীভাবে ঐ বাড়িতে ১২ বছরের একজন কিশোরী গৃহকর্মীর কাজ করে তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন আইনজীবীরা।
আইনজীবী জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, “আমাদের দেশে সরকার শিশুশ্রম একেবারেই বন্ধ করেছে। সেখানে ১২ বছরের শিশু কীভাবে বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে তা খতিয়ে দেখা উচিত এবং কীভাবে এই মৃত্যু হয়েছে তাও অধিকতর তদন্ত হওয়া উচিত।”
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ বলেন, “ঘটনার পরপর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখানে কি হত্যাকাণ্ড হয়েছে নাকি আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখার জন্য আইনী প্রক্রিয়া প্রতিপালিত হচ্ছে। এর পিছনে কেউ জড়িত থাকলে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব। ইতোমধ্যে যে বাড়িতে ঘটনা ঘটেছে তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নিহত কিশোরীর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে।”