খাগড়াছড়িতে মাদ্রাসায় ছাত্রকে (১০) যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে আদালত ভিকটিমের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষকের নাম মো. নোমান মিয়া ওরফে রোমান (২২)। তিনি দীঘিনালার ছোট মেরুং এলাকার মো. আলী মিয়ার ছেলে। গতকাল বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু তাহের এই রায় প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ছোট মেরুং আল ইকরা হিফজুল কোরআন মাদ্রাসায় হাফেজ মো. নোমান মিয়া একই মাদ্রাসার এক ছাত্রকে যৌন নিপীড়ন করে। এই ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার একই বছরের ২৩ আগস্ট দীঘিনালা থানায় মামলা দায়ের করেন। ভিকটিমের বাবা মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন, তার ১০ বছরের ছেলে মেরুং আল ইকরা হিফজুল কোরআন মাদ্রাসার ছাত্র। সে মাদ্রাসায় অবস্থান করেই হেফজ বিভাগে পড়াশুনা করতো। রাতের বেলা হাফেজ নোমান তার শয়ন কক্ষে নিয়ে ওই ছাত্রকে দিয়ে হাত, পা এবং শরীর মেসেজ (টিপাইত) করাতো। এক পর্যায়ে মাদ্রাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়লে ছাত্রকে জোরপূর্বক যৌন নিপীড়ন করে। তখন থেকে শিক্ষক নোমান বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বিভিন্ন অজুহাতে ওই ছাত্রকে মারধর করতো। ছাত্র ঘটনাটি তার নানীকে জানালে নানী মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক হাফেজ মোহাম্মদ শরীফুল ইসলামকে জানান। মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। তখন থেকে শিক্ষক নোমান নানা অজুহাতে ওই ছাত্রের উপর শারীরিক নির্যাতন বাড়িয়ে দেন। এক পর্যায়ে ছাত্রটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। মামলা দায়ের পর ২০১৮ সালের ২২ মে চার্জ গঠন করা হয়। মামলা চলাকালীন মোট ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় প্রদান করেন। আসামিকে সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ভিকটিমের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ারও নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বিধান কানুনগো সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, এমন রায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।












