খরা কাটার ইঙ্গিত দিচ্ছে পুঁজিবাজার?

| বৃহস্পতিবার , ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ঈদের ছুটি শেষে পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনায় ঝোঁক বাড়তে দেখা যাচ্ছে। ঈদের আগে ও পরে মিলিয়ে সূচক বাড়ল টানা সাত কর্মদিবস। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের পর প্রথমবার টানা দুই দিন সাতশ কোটি টাকা ছাড়ানো লেনদেন দেখা গেল। এই লেনদেন চলতি বছরের তৃতীয় সর্বোচ্চ।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর দরপতন শুরু হওয়া পুঁজিবাজারে এই প্রথমবারের মতো এমন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সাধারণ সূচক ডিএসইএঙ ২.৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে, যা গত ৯ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। সেদিন ডিএসইএঙের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২৮৩ পয়েন্ট। খবর বিডিনিউজের।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে হাতবদল হয়েছে মোট ৩৪৮টি কোম্পানির শেয়ার। গত কয়েক মাসে এই সংখ্যাটিও সর্বোচ্চ। প্রায়ই তালিকাভুক্ত ৩৯২টি কোম্পানির মধ্যে ৮০ থেকে ৯০টি কোম্পানির একটি শেয়ারও হাতবদল না হতে দেখা গেছে। এই সংখ্যাটি নেমে এসেছে ৪২ এ। এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৪টির, হারিয়েছে ৭২টি আর আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে ২১২টি কোম্পানি, সেগুলোর বেশিরভাগই ফ্লোর প্রাইসে আছে। তবে লোকসানি ও স্বল্প মূলধনী দুর্বল কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের যে ঝোঁক, সেই প্রবণতা থেকে বের হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।

শেয়ার দরের তুলনায় ব্যাংক খাতে আকর্ষণীয় লভ্যাংশও বিনিয়োগকারীদেরকে এই খাতে আকৃষ্ট করতে পারছে না। বছরের পর বছর ধরে দারুণ লভ্যাংশ দিয়ে আসা বহুজাতিক শক্তিশালী কোম্পানির ক্রেতা নেই। ভালো দেশি কোম্পানির শেয়ারও ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। ঈদে ৫ দিন ছুটি শেষে গত সোমবার সূচকে যোগ হয় ২৩ পয়েন্ট, পরদিন ১১ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও বাড়ছে ধারাবাহিকভাবেই। ১২ এপ্রিল লেনদেন ছিল ৪১১ কোটি টাকার কিছু বেশি। ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে ১৮ এপ্রিল তা সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকা ছাড়ায়। ঈদের ছুটি শেষে সাধারণত লেনদেন কম থাকে। তবে এবার ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবস সোমবার ছুটিতে যাওয়ার আগের প্রায় সমান লেনদেনে ইঙ্গিত মেলে যে বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হতে শুরু করেছেন। সেদিনও লেনদেন হয় সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকার বেশি। পরের দিন বা আরও বেড়ে ছাড়ায় ৭১৩ কোটি টাকা। বুধবার সেটি আরও বেড়ে হল ৭৬৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। চলতি বছর এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন।

ইতিবাচক প্রবণতাতেও কাটেনি ভারসাম্যহীনতা

পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রবণতাতেও লেনদেনে ভারসাম্যহীনতা কাটেনি। গতকাল কেবল ২০টি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে মোট লেনদেনের ৬২ শতাংশেরও বেশি। টপ টোয়েন্টিতে হাতবদল হয়েছে ৪৭৮ কোটি ৯৭ লাখ ১৪ হাজার টাকার শেয়ার। আর টপ টেনে লেনদেন হয়েছে মোট লেনদেনের ৪৪ শতাংশের মতো বা ৩৩৭ কোটি ৫৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। যেসব কোম্পানির দর বেড়েছে, সেগুলোতে হাতবদল হয়েছে মোট ৪০০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। আর যেগুলোর দরপতন হয়েছে, সেগুলোতে লেনদেন হয়েছে ২৮৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। যেগুলো আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে, সেই ২১২টি কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে কেবল ৩১ কোটি ২০ লাখ ৫২ হাজার টাকা। এসব কোম্পানির মধ্যে অনেকগুলোই শক্তিশালী মৌলভিত্তির।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচার কিশোরের মৃত্যু ঘিরে নানা প্রশ্ন
পরবর্তী নিবন্ধলামায় ৫১ রোহিঙ্গা আটক