ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের কর্মকর্তাসহ আসামি মোট ৮ জন। জয়ের বিরুদ্ধে করা মামলায় তার মাসহ মোট ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মামলা দুটি দায়েরের তথ্য দিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। খবর বিডিনিউজের।
দুদক কর্মকর্তা বলেছেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকারের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালনকালে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল প্রকল্পের কূটনৈতিক এলাকায় ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তায় প্লট নিজের ও ছেলে নাম বরাদ্দ নিয়েছেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে অনিয়মের তথ্য পাওয়ার পরই মামলা করেছে সংস্থাটি। দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদুক।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার ছেলে–মেয়ে, বোন ও তার ছেলে–মেয়ের নামে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ–রাজউক প্রতিটি ১০ কাঠা করে ছয়জনের নামে মোট ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ছেলে জয় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবৈতিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা।
প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার ও নিয়মের অভিযোগে ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে দুদক। ১৩ জানুয়ারি বোন শেখ রেহানা ও তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এসব মামলায় শেখ হাসিনাকেও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া রেহানা ও তার ছেলে–মেয়ের বিরুদ্ধে করা মামলায় তার আরেক মেয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন– গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য শফি উল হক, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সদস্য (উন্নয়ন), অবসরপ্রাপ্ত মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ও উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ।
দুই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনা নিজের মালিকানায় ও তার ছেলে, মেয়ে, বোন এবং বোনের দুই ছেলে–মেয়ের নামে ঢাকা শহরে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরেও সেই তথ্য গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। এতে বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালা লঙ্ঘন হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার দপ্তরসহ প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের কর্মচারীদের প্রভাবিত করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।