ক্যাচ মিসতো ম্যাচ মিস। ক্রিকেটের চিরন্তন এক প্রবাদ। হাত ফসকে ক্যাচ পড়ে যাওয়া মানে ম্যাচটাও পড়ে যাওয়া। যেমনটি হয়েছে গতকাল বাংলাদেশের বেলায়। দুই শ্রীলংকান ওপেনার করুনারত্নে এবং থিরিমান্নের অন্তত তিনটি সহজ ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। যার খেসারতটাও বেশ ভাল ভাবেই দিতে হয়েছে টাইগারদের। দিন শেষে দুজনই তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। আর তাতে স্বাগতিকরা আভাস দিয়ে রেখেছে রানের পাহাড় গড়ার। পাল্লেকেলেতে সিরিজের দ্বিতীয় শেষ টেস্টের প্রথম দিনে প্রথম ইনিংসে লংকানদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ২৯১। আগের টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করা করুনারত্নে এই টেস্টেও তেমন কিছুর আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত তাকে ফিরিয়েছেন অভিষিক্ত শরীফুল। তাকে ১১৮ রানে থামাতে পারাটাই যেন বড় স্বস্তির টাইগার শিবিরে। লংকান অধিনায়কের এটি দ্বাদশ টেস্ট সেঞ্চুরি। আরেক ওপেনার থিরিমান্নে ধৈর্য্যশীল ইনিংসে অপরাজিত ২৫২ বল খেলে ১৩১ রানে। করুনাররত্নে ও থিরিমান্নের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ২০৯ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলংকার প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি উদ্বোধনী জুটি এটি।
যদিও দিনটা অন্য রকম হতে পারতো বাংলাদেশের। প্রথম সেশনেই স্বাগতিকদের চেপে ধরার সুযোগ এসেছিল টাইগারদের সামনে। কিন্তু বারবার হাত ফসকে বেরিয়ে গেছে ক্যাচ গুলো। তাসকিন বেশ ভালই বল করছিলেন। কিন্তু সতীর্থদের ব্যর্থতায় তার দিন কাটে উইকেটবিহীন। প্রথম সেশনে তার বলেই আসে তিনটি সুযোগ। ২৮ রানে মিড অফে ক্যাচ করুনারত্নে। কিন্তু ধরতে পারেননি মোমিনুল। দুই বল পরই স্লিপে সহজ ক্যাচ হাতে জমাতে ব্যর্থ হন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর থিরিমান্নের শট গালি দিয়ে বল বেরিয়ে যায় বাউন্ডারিতে। মেহেদী হাসান মিরাজ ঝাঁপিয়েও পারেননি বল ধরতে।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা স্বাগতিকদের বেশ চেপে ধরতে পেরেছিল বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু প্রথম ঘন্টার পর থেকেই দিশা হারায় বাংলাদেশের বোলিং। রান আসতে থাকে অবিরত। দ্বিতীয় সেশনে আরও বেগবান হয় রানের স্রোত। বাংলাদেশের বোলিং-ফিল্ডিং, কিছুই ভালো হয়নি এসময়। কার্যকর হয়নি পেস-স্পিন কিছুই। শরীরী ভাষাও পড়তে থাকে ক্রমে। আর সে সুযোগে করুনারত্নে ও থিরিমান্নে এগুতে থাকেন সাবলিল গতিতে। লাঞ্চের আগে যেখানে ২৭ ওভারে আসে ৬৬ রান সেখানে লাঞ্চের পর ৩১ ওভারে আসে ১২২ রান। করুনারত্নে তার হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ১০২ বলে। সেখান থেকে সেঞ্চুরিতে যেতে লাগে মাত্র ৫৪ বল। অপরদিকে থিরিমান্নের হাফ সেঞ্চুরিও আসে ১০২ বলে। ক্যারিয়ারের তৃতীয় ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে পা রাখেন তিনি ২১২ বল খেলে। ৬৩ ওভার পেরিয়ে অবশেষে ভাঙে এই জুটি। শরিফুলের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেট রক্ষক লিটনের হাতে। সেটাই টাইগারদের দিনের প্রথম এবং শেষ সাফল্য। দিনের বাকি সময়টাও আরো কঠিন হয়েছে বাংলাদেশের বোলারদের জন্য। ওশাদাকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৮২ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিণ্ন থাকেন থিরিমান্নে। এই ওপেনার অপরাজিত ১৩১ রানে। আর ওশাদা অপরাজিত ৪০ রানে।