পবিত্র কোরবান হলো মুসলিম সমাজের একটি ইবাদাত। যা প্রতি বছর বৃত্তবানদের উপর আরোপিত হয় নির্দিষ্ট সময়ে। এই ইবাদতের মাধ্যমে মুসলিমরা মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করে থাকেন। কোরবানি অর্থ ত্যাগ স্বীকার। আত্মত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমেই নৈকট্য লাভ সম্ভব বিধায় একে বলা হয় কোরবানি। মানব সমাজেও এই নৈকট্য মূলত ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমেই অর্জিত হয়। বাবা–মায়ের সঙ্গে সন্তানের যেমন নৈকট্যের মূলে রয়েছে পরস্পরের জন্য ত্যাগ স্বীকার এবং স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে নৈকট্যের মূলেও রয়েছে ত্যাগের মনোবৃত্তি। আমাদের বৈষয়িক জীবনের সাফল্য ও ত্যাগ শুধু কোরবানির বিনিময়ে সম্ভব। ধর্মীয় বিধান পালনের পাশাপাশি কোরবানির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মাধ্যমে সামাজিক ও পারিবারিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিশাল ঈদগাহ ময়দানে সর্বস্তরের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ আদায় করা ও কোরবানির গোশত গরিব দুঃখী, আত্মীয় স্বজন এবং সুবিধাবঞ্চিত পাড়া প্রতিবেশীদের মাঝে বণ্টনের মাধ্যমে তৈরি হয় আন্তরিক সহযোগিতা, সহমর্মিতা, সহাবস্থান ও সামাজিক ঐক্যবদ্ধতার মানসিকতা। শুধুমাত্র পশু জবা করাই কোরবানি নয়। নিজের পশুত্ব, ক্ষুদ্রতা, নীচুতা, স্বার্থপরতা, হীনতা, দীনতা, আমিত্ব ও অহংকার ত্যাগের নাম কোরবানি। হালাল উপার্জন, ইখলাস ও একানিষ্ঠতাই হলো কোরবানি কবুল হওয়ার আবর্শকীয় শর্ত। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত কোরবানির শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে জীবনকে সুন্দর ও সুখময় করে গড়ে তোলা।