কোপায় আর্জেন্টিনার ৩০ তম ফাইনাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১১ জুলাই, ২০২৪ at ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ

কোপা আমেরিকা কাপের ফাইনালে খেলাটা যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে আর্জেন্টিনার। সবশেষ আট আসরের ৬টিতেই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নাম লেখাল মেসির দল। অবশ্য শিরোপাও জিতেছে ১৫ বার। যদিও আলভেসেলেস্তেদের এই কৃতিত্বে ভাগ রয়েছে উরুগুয়ের। তারাও ১৫ বার কোপার শিরোপা জিতেছে। তাই ৩০ বার ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া আর্জেন্টিনার সামনে সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ। যদিও তেমন সুযোগ রয়েছে উরুগুয়েরও। আজ যদি তারা দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কলম্বিয়াকে হারাতে পারে তাহলে তারাও যাবে ফাইনালে । আর সেখানে আর্জেন্টিনাকে হারাতে পারলেই তারা ছাড়িয়ে যাবে সবাইকে। ১৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে এই ফাইনাল। গতকাল বাংলাদেশ সময় সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির মেট লাইফ স্টেডিয়ামে কানাডাকে ২০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা।

টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। সেদিনও ২০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। তিন ম্যাচ পর একই দলের কাছে একই ব্যবধানে হারল কানাডা। খেলার শুরু থেকে আর্জেন্টিনাকে ছেপে ধরার চেষ্টা করেছিল কানাডা। আর সে সুবাদে প্রথম সুযোগ পায় কানাডাই। পঞ্চম মিনিটে ডিবক্সে ঢুকে বাম পাশ থেকে নেওয়া জ্যাকব শ্যাফলবার্গের শট চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। দুই মিনিট পর দ্রুত গতির আক্রমণে প্রায় একই জায়গায় বল পান শ্যাফলবার্গ। এবার তার গড়ানো শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। তবে খেলায় ফিরতে বেশি সশয় নেয়নি আর্জেন্টিনা। ১২ মিনিটে ডান পাশ থেকে ডি মারিয়ার পাসে বল পেয়ে যান মেসি। ডিবঙের বাইরে থেকে তিনি যে শট নেন তা চলে যায় বার ঘেষে। ২৩ মিনিটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে রদ্রিগো ডি পলের থ্রু বাড়ানো বল দারুণভাবে প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নেন আলভারেস। চ্যালেঞ্জ জানাতে আসা ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে তিনি খুঁজে নেন জালের ঠিকানা। চলতি কোপা আমেরিকায় দ্বিতীয় ও সবমিলিয়ে আর্জেন্টিনার জার্সিতে আলভারেসের এটি নবম গোল।

৩৪ মিনিটে ডান পাশ থেকে ডি মারিয়া যে শট নেন তা চলে যায় বাইরে। ৪৪ মিনিটে আরেকটি সুযোগ পান মেসি। ডান পাশ থেকে ডি মারিয়ার পাসে বল ধরে ডিবঙে ঢুকে ডান পায়ের শট নেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। এবারও অল্পের জন্য পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বল। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে অনেকটা ফাঁকায় বল পেয়েও ক্রসবার উচিয়ে মারেন মেসি। দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা কমে আর্জেন্টিনার আক্রমণের ধার। তবে প্রথম জোরালো আক্রমণেই জাল খুঁজে নেয় তারা। ডান প্রান্তে ডি বক্সের ভেতর থেকে বল বাড়ান মেসি। দ্রুত জায়গা করে আবার ভেতরে ঢুকেন তিনি। বল ঘুরে ডি বঙের সামনে ফের্নান্দেসের সামনে আসে। জোরালো শট নেন তিনি। তবে বল জালে ঢুকার আগে বাম পা ছুঁয়ে একটু দিক পাল্টে জালে পাঠান মেসি। চলতি কোপা আমেরিকায় এটিই আর্জেন্টিনা অধিনায়কের প্রথম গোল। সবমিলিয়ে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে ১৪ তম গোল। কোপা আমেরিকার ভিন্ন ছয় আসরে জালের দেখা পেলেন আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ১০৯ গোলের মালিক লিওনেল মেসি।

দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর কিছুটা রিলাঙ মুডে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। সে সুযোগে একটু আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে কানাডা। কিন্তু তাদের সে আক্রমন আর গন্তব্যে পৌঁছেনি। ৬১ মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ ছিল আলভারেসের সামনে। ডি মারিয়ার থ্রু বাড়ানো বল ডিবক্সের কাছে ফাঁকায় পেয়ে যান আলভারেস। কিন্তু তিনি শট নেন একদম গোলরক্ষক ম্যাক্সিম ক্রেপু বরাবর। পরের মিনিটে আক্রমণে ওঠে কানাডা। আলি আহমেদের পাস থেকে পাওয়া বল বারের ওপর দিয়ে মারেন ইসমাইল কোনে। ৭৫ মিনিটে আর্জেন্টিনার রক্ষণ ভীতি জাগায় তারা। তবে জটলার মধ্যে সুবিধা করতে পারেনি দলটি। শেষ দশ মিনিট উজ্জীবিত ফুটবল খেলে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে কানাডা। ৮৯ মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে তানি ওলুয়াসেইর পায়ের শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঠেকান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পরের মিনিটে অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে যায় তানির হেড। শেষ পর্যন্ত জাল অক্ষত রেখে ফাইনালে ওঠার আনন্দে মাতে আর্জেন্টিনা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদল বদলের শেষ দিনে মোহামেডান ব্লুজের চমক
পরবর্তী নিবন্ধবাণিজ্যিক সিনেমায় নতুন স্টাইল তৈরির চেষ্টা করছি : রাফী